ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেট অস্ত্রসহ সাবেক ব্যবসায়ী নেতা গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
সিলেট অস্ত্রসহ সাবেক ব্যবসায়ী নেতা গ্রেফতার মামুন কিবরিয়া সুমন।

সিলেট: সহোদরের করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মামুন কিবরিয়া সুমন।

শনিবার (৩০ মার্চ) র‌্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে নগরের সুবিধবাজার অবস্থিত নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মামুন এন্টারপ্রাইজ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এসময় সুরঞ্জিত এবং শঙ্কর নামে প্রতিষ্ঠানটির আরো দুই কর্মচারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযানকালে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মামুনের মালিকানা স্পেনের তৈরি একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও কিছু ইয়াবা জব্দ করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সিলেট বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মামুন কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কাগজ জাল, জালিয়াতির অভিযোগ এনে মামলা করেন তারই বড় ভাই সুজন কিবরিয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানকালে ইয়াবা ট্যাবলেট ও ইয়াবা সেবনের উপকরণ জব্দ করেছেন দাবি করেন ওসি।  

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা বাংলানিউজকে বলেন, অভিযানকালে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ ব্যবসায়ী মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে তাকে ফাঁসাতে মামলাসহ ঘটনাটি সাজানো হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের সুবিধবাজারে মামুন এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দোতলা সুজন কিবরিয়া ও নিচ তলায় মামুন কিবরিয়া বসে ব্যবসা পরিচালনা করেন। বেশ কয়েকটি কোম্পানির সিমেন্ট ও এমএস রডের ডিলারশিপ ব্যবসায়ী তারা। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে শাবিপ্রবি গেট সংলগ্ন মূল্যবান ভূমিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিমেন্টের গুদাম, মামুন পরিবহন নামে ট্রান্সপোর্টের ব্যবসাসহ বিভিন্ন স্থাপনাসহ বিপুল সম্পদের মালিক দুই ভাই।  

সিলেট চেম্বারের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, দুই ভাইয়ের মালিকানায় কোটি কোটি টাকার ব্যবসা ও সম্পদ রয়েছে। যৌথ ব্যবসা থেকে সম্পদ কেনা হয় বড় ভাইয়ের নামে। বেশ কিছুদিন ধরে সম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে মামুন কিবরিয়া ও সুজন কিবরিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তাদের এই বিরোধ নিরসনে চেম্বার নেতাদের ভূমিকাও নিস্ফল হয়। মামুন গ্রেফতারের খবর শুনে তার সঙ্গে দেখা করতে চেম্বার নেতারাও থানায় যান। ওই সময় পুলিশ ব্যবসায়ী মামুনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে ব্যবসায়ী নেতাদের জানান। ব্যবসায়ীরাও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণায় পুলিশের সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়।    

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক এক পরিচালক বাংলানিউজকে বলেন, একজনকে সহোদরকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হলে অন্যজন কেন নয়। কারণ ভবনটির দলিলতো সুজন কিবরিয়ার নামে। আবার একই ব্যবসায় দু’জনের নামে ব্যাংক ঋণ রয়েছে। ব্যবসা ভাগাভাগি নিয়ে টানাপড়েনে এ ঘটনার সৃষ্টি।

ওই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, যেহেতু যৌথ ব্যবসা। তাই ব্যবসায়িক সম্পদ বড় ভাইয়ের নামেই করেছেন মামুন কিবরিয়া। নগরের চারাদিঘীর পাড় এলাকায় কিবরিয়া প্লাজা নামে একটি নির্মাণাধীন ভবনসহ ভূমির মালিক ছিলেন তারা। ওই ভূমি বিক্রি করেন এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে। ব্যবসা থেকে ছোট ভাইকে বঞ্চিত রাখতে সুকৌশলে ফাঁসানো হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার মনে করেন ওই ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে জানতে সুজন কিবরিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৯
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।