মুখোশসহ বিভিন্ন ধরনের লোকজ মোটিভ তৈরি করা হলেও শোভাযাত্রায় এবার প্রাধান্য থাকছে পাখির প্রতিকৃতির- এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে এবার শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য করা হয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'নৈবেদ্য' কাব্যগ্রন্থের ৪৮ নম্বর কবিতার 'মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে' চরণটি।
আহ্বায়ক তন্ময় দেব নাথ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি চলছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে। আমরা একটার পর একটা শেষ করছি। গতবারের তুলনায় এবার পাখির প্রতিকৃতি বেশি থাকবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জয়নুল গ্যালারির দক্ষিণ পাশে অনুষদ প্রাঙ্গণে চলছে শোভাযাত্রার প্রতিকৃতি তৈরির কাজ। সেখানে বাঘ, ঘোড়া, উল্টা কলসি, পাখির শিল্পকর্ম প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেখানে নির্দেশনা দিচ্ছেন চারুকলার শিক্ষক শিশির ভট্টাচার্য। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের নকশা দেখে নিখুঁতভাবে নির্মাণ কাজ করছেন।
পাখির মধ্যে রয়েছে পেঁচা, কাঠঠোকরা। তবে এবার প্রতিকৃতির মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় থাকবে বাঘ ও বকের শিল্পকর্ম- জানান উৎপল ভৌমিক। তিনি বলেন, আমরা বাঘ ও বকের গল্প আমরা সবাই জানি। আমরা এটিকে শিল্পের মাধ্যমে তুলে ধরবো। মূল দায়িত্বে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা থাকলেও অনুষদের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীসহ সাবেকদের অনেকে কাজ করছেন। এছাড়া অনেকে মুখোশ তৈরি করছেন, আবার রং দিয়ে সৌন্দর্য বাড়াচ্ছেন অনেকে। কেউবা ছোট ছোট পাখি তৈরি করছেন।
মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে দরকার বড় পরিমাণের অর্থ। যার একটি আসে শিল্পকর্ম বিক্রির মধ্যদিয়ে। অনুষদের জয়নুল গ্যালারির ভেতরে বাইরে চলছে শিল্পকর্ম বিক্রি। ১৯ মার্চ এসব তৈরির অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী। শিল্পকর্মের মধ্যে চাহিদা বেশি রয়েছে মুখোশের।
অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের রাসেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দামের মুখোশ রয়েছে। তবে বড় রাজা-রানির মুখোশের দাম আরও অনেক বেশি। এছাড়া বড় সরাচিত্র ৫০০-১০০০ টাকা, ছোট সরাচিত্র ২০০-৫০০ টাকা, বাঘ ও পেঁচা এক-দেড় হাজার টাকা, পাখির ট্যাপা পুতুল ১০০-৩০০ টাকা, পেপার ম্যাশ ৫-১০ হাজার টাকা, ফুল ১০০-২০০ টাকা, চিত্রকর্ম ১৫০০-৫০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলা নববর্ষ-১৪২৬ উদযাপন উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল সকালে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে এ শোভাযাত্রার উদ্বোধন করবেন। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে ৩৭-সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এই কমিটির সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নববর্ষ উদ্যাপনে দু’টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে- শৃংখলা উপ-কমিটি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটি। ৪১-সদস্যবিশিষ্ট শৃংখলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর মো. আবদুর রহিম। ৫১-সদস্যবিশিষ্ট মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর মো: নাজির হোসেন খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৯
এসকেবি/এএ