ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নন্দীগ্রামে থামছে না মাটিকাটা-বালু উত্তোলন!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৯
নন্দীগ্রামে থামছে না মাটিকাটা-বালু উত্তোলন!

বগুড়া: বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার মধ্য দিয়ে বহমান নাগর নদী। এ নদীর জোরদাহ, বলদখাল ও পবনাতলাসহ বেশ কয়েকটি স্থান থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি এবং বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী চলাচলের রাস্তা।

দীর্ঘদিন ধরে নদীর এসব স্থান থেকে মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যেই অনেক ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। একইভাবে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে অনেক গাছপালা।

আসছে বর্ষা মৌসুমেও আবারো এলাকার কৃষকদের আগের মতোই খেসারত দিতে হবে। নতুন করে বিলীন হবে ফসলি জমিসহ গাছপালা। তবু থামছে না মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার নাগর নদীর ওইসব স্থানগুলো কোনো বালুমহাল না। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় নদীর ওই স্থানগুলো বালুমহাল বানিয়ে ফেলেছেন জয়নাল আবেদীন ও বুলবুলসহ কয়েকজন ব্যক্তি। এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নদীর ওই স্থানগুলো থেকে ইচ্ছেমতো মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

প্রভাবশালী হওয়ায় নিজেদের ক্ষতি হলেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধে সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগও দিতে চান না তারা।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের কাজ। আর সেই মাটি ও বালু নদী তীরবর্তী রাস্তা ব্যবহার করে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে নেওয়া হয়। এতে রাস্তার বারোটা বেজে গেছে। সেটা আসছে বর্ষা মৌসুমেই টের পাবেন এলাকার লোকজন। অথচ মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের কাজটি প্রকাশ্যে চললেও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিয়ে নীরব। তারা যেন দেখেও দেখছেন না– এমন অভিযোগ তাদের।

সোলায়মান আলী নামে এক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, গেলো বর্ষায় আমার কিছু জমি নদীগর্ভে বিলীত হয়ে গেছে। আসছে বর্ষায়ও হয়তো কিছু জমি বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু কিইবা করার আছে। কারণ তারা তো প্রভাবশালী।

কৃষক মাজেদ আলী একই সুরে কথা বলে বাংলানিউজকে জানান, দ্রুত মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। এজন্য তিনি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নদী তীরবর্তী স্থান থেকে মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমিসহ রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই দ্রুত মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তবে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেও মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন কাজের সঙ্গে জড়িত জয়নাল আবেদীন ও বুলবুলের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. শারমিন আখতার বাংলানিউজকে জানান, দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ওইসব স্থান থেকে মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ৬ এপ্রিল, ২০১৯
এমবিএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।