ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক নয় যেন ধানের ক্ষেত

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৯
সড়ক নয় যেন ধানের ক্ষেত মহাসড়কটির বর্তমান অবস্থা। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার যাত্রীদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টি-কাদায় মহাসড়কটি যেন ধানের ক্ষেতে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় প্রতিদিন যানজট আর দুর্ঘটনা আতঙ্ক নিয়েই হাজার হাজার যানবাহন চলছে এ মহাসড়েকে।

জানা যায়, ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও দক্ষিণাঞ্চলের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার যাতায়াতের প্রধান রুট হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক। সম্প্রতি মহাসড়কটির দুই প্রান্তের বেশিরভাগ অংশ সংস্কার করা হয়েছে।

তবে মাঝখানের অংশ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার খালকুলা থেকে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা ১০ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় এখনো সংস্কার শুরু করা হয়নি। পুরো রাস্তা স্বাভাবিকভাবে আসলেও এখানে এসেই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের।  

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী লিটন কবির, ভ্যান চালক আলহাজ্ব আলীসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের কোনো কোনো অংশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে ওই গর্তগুলো পানি আর কাদা হয়ে ধানের ক্ষেতে পরিণত হয়। এছাড়াও পুরো সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ রয়েছে। বিশেষ করে মহিষলুটি বাজারের পূর্ব পাশে সৃষ্ট হওয়া বিশাল আকারের গর্তটি যাত্রীদের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মহাসড়কটির বর্তমান অবস্থা।  ছবি: বাংলানিউজ

পরিবহন শ্রমিকেরা বাংলানিউজকে বলেন, হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কটি অনেকদিন ধরেই দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সম্প্রতি এ মহাসড়কে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর চালক ও যাত্রীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। ইতোমধ্যে রাস্তাটির দুই প্রান্তের বেশিরভাগ অংশ সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু খালকুলা থেকে কাছিকাটা পর্যন্ত এলাকায় সংস্কার করা হয়নি। ফলে এই রাস্তাটুকই আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মহিষলুটি বাজারের পূর্বপাশে সৃষ্ট বিশাল গর্ত মাড়িয়ে যানবাহন নিয়ে যাওয়াই ঝুঁকিপূর্ণ।

তাড়াশ উপজেলার নঁওগা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুন বাংলানিউজকে বলেন, মহাসড়কে খানাখন্দ আর গর্তের কারণে মাঝে মধ্যেই তীব্র যানজটেরও সৃষ্টি হয়। অনেক সময় খালকুলা থেকে মহিষলুটি বাজার পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন হয়। স্থানীয়রাও এই মহাসড়কটি নিয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনোয়ার পারভেজ বাংলানিউজকে জানান, হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে কাছিকাটা টোলপ্লাজা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার মহাসড়ক আমাদের সিরাজগঞ্জ সওজের আওতায় রয়েছে। ইতোমধ্যে এই রাস্তার ১৬ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। বাকি ৯ কিলোমিটার রাস্তার জন্য অধিদপ্তরে আলাদা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। প্রিয়োডিক মেইনটেইনেন্স প্রোগ্রামের (পিএমপি) আওতায় এই রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনাটি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পের প্রস্তাবনাটি ফিরে এসেছে। আবার ডিজাইন করে পাঠাতে বলা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের সার্ভে কাজ চলছে। তবে এই অর্থ বছরে প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আগামী অর্থ বছরে প্রকল্পটির অনুমোদন হলে এ মহাসড়কের বাকি ৯ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।