ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

২০০ উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন করতে জমি বরাদ্দ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৯
২০০ উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন করতে জমি বরাদ্দ স্থানীয় সরকার বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

ঢাকা: স্থান ও সময়ভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেতে দেশের ২০০ উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন নির্মাণে উপজেলা পরিষদের জমি ব্যবহার করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এসএম গোলাম ফারুক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া সমঝোতা স্মারক সই করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এ সসময় উপস্থিত ছিলেন।

আবহাওয়া সংক্রান্ত সেবার মান উন্নত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে অধিকতর নির্ভুল ও আগাম পূর্বাভাস প্রদানের মাধ্যমে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি প্রশমন করাই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ৫২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ২০০ উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন নির্মাণ ছাড়াও ৬৫টি স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টিমাপক যন্ত্র ও ৩৫টি সিনপটিক এডব্লিউএস স্থাপনের মাধ্যমে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির মানোন্নয়ন করা হবে। এছাড়া আবহাওয়া সদর দপ্তর কার্যালয়ের ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ছাড়াও ছয়টি বিভাগে জলবায়ু কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

পাশাপাশি সবগুলো আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারগুলোকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

অনুষ্ঠানে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল আবহাওয়ার আগাম সতর্কবাণী আরো বেশি উন্নত করা এবং যে সংকেতগুলো দেওয়া হয় সেগুলোতে যেন ভুলের পরিমাণ কমে যায়। আমরা উপজেলা পর্যায়ে আবহাওয়া সেবাকে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্প্রসারিত করতে চাই। বিভিন্ন উপজেলায় এখন আবহাওয়ার তথ্য পাওয়া যায় না। অর্থাৎ যেখানে অটোমেটিক আবহাওয়া স্টেশন নাই। ২০০ উপজেলায় যখন আবহাওয়া স্টেশন বসে যাবে তখন প্রত্যেক উপজেলা থেকে নিয়মিত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটাগুলো পাব। তাহলে আমাদের ডাটার সংখ্যা বাড়বে এবং আগাম সতর্কবাণী আরো উন্নত হবে।

তিনি বলেন, কোনো এক উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন না থাকায় কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, তাপমাত্রা কী থাকে তা রেকর্ড করতে পারি না। কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করতে গিয়ে গত ৩০ বছরে বৃষ্টিপাতের ধরন কী ছিল, তাপমাত্রা কী ছিল, বাতাস কোন দিক থেকে হয়- এসমস্ত তথ্য প্রকল্প পর্যালোচনাকালে প্রয়োজন হয়। স্টেশন না থাকার কারণে আমরা এসমস্ত তথ্য দিতে সক্ষম না। যখন স্টেশন হয়ে যাবে তখন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে আবহাওয়া ও পরিবেশগত যে বিষয়গুলো বিশ্লেষণের প্রয়োজন হবে সুনির্দষ্টভাবে তা আমরা সরবরাহ করতে পারব।

আবহাওয়াবিদ সামছুদ্দিন আরো বলেন, এখন যে পূর্বাভাস হয়, অনেক সময় এটিকে সাধারণ মানুষ বলে খুবই জেরারেলাইজ। বাংলাদেশে আমাদের এখন চাহিদা হলো সময় ও স্থানভিত্তিক পূর্বাভাস পাওয়া, যাতে আমরা প্রতিদিনের জীবন-জীবিকায় কৃষি উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদনে এটি ব্যবহার করতে পারি। এই তথ্য যতো বেশি আমরা সরবরাহ করতে পারব ততো বেশি সকলেই সমৃদ্ধভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। এই তথ্য কৃষি, মৎস্য, পানি সম্পদসহ অর্থনীতির বিভিন্ন কাজে আসবে বলে আমাদের ধারণা। এজন্য আমরা আবহাওয়া তথ্য নেটওয়ার্কে সারাদেশে সম্প্রসারিত করতে চাচ্ছি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, অঞ্চলভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস যদি সঠিকভাবে পাই তাহলে কৃষি ও মৎস্যসহ অন্যান্য বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। পূর্বাভাসের উপর ভিত্তি করে কী কী করা দরকার এবং কী কী করলে আমাদের জন্য লাভজনক হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জলবায়ু এবং আবহাওয়া সম্পর্কে স্থানভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক সতর্কবাণী পাবো, এতে আমাদের ফসলসহ গবাদি পশু ও জীবন রক্ষা পাবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, আবহাওয়ার যে তথ্য দেওয়া হতো সেটি স্থানভিত্তিক ছিল না। এটিকে আরো সুনির্দিষ্ট করার লক্ষ্যে এবং কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে যেন ক্ষয়ক্ষতি বা আবহাওয়াওয়াজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এজন্য স্থানীয় সরকারি বিভাগ এগিয়ে এসেছে। আমরা আশা করছি বাকি উপজেলাগুলোতেও কাজ করতে পারব।

প্রতিরক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, আমরা যখন উপজেলা ভিত্তিক যাবো তখন স্থান ও সময়ভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করতে পারবো। এতে আরো বেশি উপকৃত হবো। উপজেলা কমপ্লেক্সে ২২০ স্কয়ার ফিট জায়গা দেওয়া হচ্ছে, এজন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।