বুধবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় যখন খবর আসলো নুসরাত আর নেই। সঙ্গে সঙ্গে ফেনী যেন শোকের শহরে পরিণত হয়।
এদিকে সোনাগাজী পৌর এলাকার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামে নুসরাতের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নুসরাতের পরিবারের সব সদস্য তার চিকিৎসার কাজে ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ মুহুর্তে তাদের বাড়িতে কেউ নেই। এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ নিরাপত্তার জন্য নুসরাতের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নুসরাতের মৃত্যু সম্পর্কে মাদ্রাসা শিক্ষক নেতা ফেনী আলীয়া মাদ্রসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। অপরাধী সিরাজউদ্দৌলা পুরো শিক্ষক সমাজের কলঙ্গ। তার শাস্তি দেখে যেন এ ধরনের অপরাধীরা শিক্ষা নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
ফেনীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়ের প্রধান সমন্বয়ক ও মানবাধিকার কর্মী মঞ্জিলা আক্তার মিমি বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার দিন প্রথম আমরা নুসরাতকেফেনী সদর হাসপাতালে দেখেছিলাম। সেদিনই ভেবে ছিলাম নুসরাতকে হয়তো আর বাঁচানো যাবে না। ঠিক তেমনটাই হলো। আমি একজন নারী হিসেবে এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সোনাগজী পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম বলেন, নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনা সোনাগাজীর মানুষদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ তৈরি করছে। আমরা অপরাধী সিরাজউদ্দৌলা এবং তার অনুসারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
নুসরাতের বাড়ি সোনাগাজী পৌর এলাকার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মেজো মৌলবী বাড়ি। তার বাবা একেএম মুসা নোয়াখালীর একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। দুই ভাইয়ের মধ্যে নুসরাত সবার ছোট।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।
এই ছাত্রীর পরিবারের ভাষ্যে, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। তারই জেরে মামলা করায় নুসরাতকে আগুনে পোড়ানো হয়। ওই মামলার পর সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
আরআইএস