আবেগ আর উচ্ছ্বাসে সিলেটজুড়ে নানা আয়োজনে চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। এখন কেবল শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনন্দ যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সকালে জেলা প্রশাসন ও শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বৈশাখের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
সিলেটের দু’টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্ব স্ব ক্যাম্পাসে উৎসব উপলক্ষে রয়েছে নানা আয়োজন। নববর্ষ বরণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতির পাশাপাশি মহানগর পুলিশের তরফ থেকে ১৫টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
সিলেটে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দলোকের আয়োজনে নগরের মীরের ময়দান শ্রীহট্ট সংস্কৃত কলেজে দিনব্যাপী সঙ্গীতানুষ্ঠান ও নৃত্যানুষ্ঠান এবং কবিতা আবৃতির আয়োজন করা হয়েছে জানিয়েছেন সংগঠনের পরিচালক রানা কুমার সিনহা।
তিনি বলেন, বর্ষবরণ উৎসব উপলক্ষে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নাচে-গানে আনন্দলোক মাতিয়ে রাখবে সংস্কৃত কলেজ প্রাঙ্গণ। অনুষ্ঠান উপভোগ করতে সবাইকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া পাশেরই ব্লু -বার্ড স্কুল মাঠে প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে শ্রুতি। সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনকে সফল করতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে এ সংগঠন।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করেত সিলেট স্টেডিয়ামে নৃত্যশৈলী আয়োজন করেছে ‘শেষ বিকেলের রং’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে নৃত্যশৈলীর নিয়মিত পরিবেশনার পাশাপাশি থাকবে লোকজ ধারার নাচ।
এদিকে, লিডিং ইউনিভার্সিটি এবার বৈশাখ উপলক্ষে মেলা, বাউলগান, পুতুল নাচ, সাপ খেলা, বানর খেলা, জাগলিং, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, আনন্দ শোভাযাত্রা, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্রের প্রদর্শনীসহ বর্ণাঢ্য আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল ক্লাবের লিডিং ইউনিভার্সিটি কালচারাল ক্লাবের সভাপতি এস এইচ নিরব এসব আয়োজনের কথা জানান।
চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নববর্ষকে বরণে শনিবার বিকেলে সুরমার তীরে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
পাশাপাশি নববর্ষ উপলক্ষে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সহযোগিতায় নগরের ক্বীনব্রিজ সংলগ্ন সুরমার তীরে আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী মেলার। এছাড়া প্রতিবারের মতো সিসিক এবারও বছরের নতুন সূর্যকে বরণ করতে পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টায় নগরে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করবে। এছাড়া সকাল ১০টায় নগর ভবনে শিশু-কিশোরদের মধ্যে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
অপরদিকে, নগরের ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপনী বিতানগুলোতে বৈশাখী পোশাক বিক্রির ধুম পড়েছে। শেষ মুহূর্তে বৈশাখী সাজসজ্জা ও পোশাক কিনতে ক্রেতারা ভিড় করছেন দোকানগুলোতে। বৃত্তশালীরা বিপনী বিতানে শপিং সারলেও বসে নেই নিম্ন আয়ের লোকজনও। তাই নগরের ফুটপাতগুলোতেও যেন বৈশাখী আমেজ বিরাজ করছে। নিম্ন আয়ের লোকজন শিশু-কিশোরদের আনন্দ দিতে সাধ্য অনুযায়ী কিনে দিচ্ছেন পোশাক। আর বৈশাখী পোশাক বিক্রির ধুম পড়ায় ব্যবসায়ীরাও বেজায় খুশি।
সিলেট নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা বাংলানিউজকে বলেন, নববর্ষ বরণ যাতে নির্বিগ্নে অনুষ্ঠান করতে পারে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সব সদস্য কোনো না কোনোভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিশেষ করে যেসব স্থানে অনুষ্ঠান হবে, সেসব স্থানে পোশাকে সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে।
তিনি বলেন, নগরের প্রবেশদ্বারগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি উচ্চস্বরে যানবাহনে মাইক বাজানো প্রতিহত করবে পুলিশ। নগরের সবক’টি পয়েন্টে শনিবার থেকে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এনইউ/আরবি/