ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্বামী খুনের বিচার না পেলে সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার হুমকি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
স্বামী খুনের বিচার না পেলে সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার হুমকি বক্তব্য রাখছেন নিহত সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার রেখা। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: ব্যবসায়ী সেলিম চৌধুরীকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন সেই খুনিরা যাতে কিছুতেই পার না পায়। সেলিম হত্যার খুনিরা যদি কোনোভাবে পার পেয়ে যায় তাহলে আমার একমাত্র ছেলে সন্তানকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া শহিদ মিনারে আত্মহত্যা করবো। আর এ আত্মহত্যার জন্য জেলার প্রশাসন ও সরকার দায়ী থাকবে। আমার স্বামীর হত্যাকারী মোহাম্মদ আলীসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের ফাঁসি চাই।

শনিবার (১২ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে বক্তাবলী সামাজিক সংগঠন ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের আয়োজনে নিহত ব্যবসায়ী সেলিম চৌধুরীর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠানে নিহত সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার রেখা এসব কথা বলেন।

মানববন্ধনে নিহতের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রেখা আরো বলেন, ‘আমার স্বামী একজন সহজ সরল ব্যক্তি ছিলেন।

কারো সঙ্গে উচ্চ স্বরে কথা বলেনি। এমনকি কারো সঙ্গে ঝগড়া করেননি। আমার স্বামীর দুই লাখ টাকা ধার দিয়ে কি অপরাধ করেছিলো? যার কারণে সেই টাকা আত্মসাৎ করতে মোহাম্মদ আলী তার সহযোগীদের নিয়ে সেলিমকে হত্যা করেছেন। আমি চাই খুনি মোহাম্মদ আলী গংরা যাতে কিছুতেই বেরুতে না পারে।

মানববন্ধনে ওই সংগঠনের সভাপতি আলামিন ইকবালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক জামালউদ্দিন বারী, নারায়ণগঞ্জ কলেজের সাবেক ভিপি আলমগীর হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ মাস্টার, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাসেল চৌধুরী, আলোকিত বক্তাবলীর সভাপতি নাজির হোসেন, ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের সাধারন সম্পাদক মতিউর রহমান ফকির, অগ্রযাত্রার সভাপতি বাদল হোসেন ববি, নিহতের মা মমতাজ বেগম, নিহতের ছেলে রিতুল চৌধুরী প্রমুখ।

নিখোঁজের ১০দিন পর ১০ এপ্রিল বিকেলে ফতুল্লার ভোলাইলে মোহাম্মদ আলীর ঝুটের গোডাউনে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ঝুটের গোডাউন মালিক মোহাম্মদ আলী, দুইজন কর্মচারী ফয়সাল ও ইউনুসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফয়সাল আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে আদ্যোপান্ত স্বীকার করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মামুন আল আবেদ বাংলানিউজকে জানান, গ্রেফতারদের মধ্যে ফয়সাল ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর কর্মচারী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মোহাম্মদ আলীর কাছে ব্যবসায়িক দুই লাখ টাকা পাওনা ছিলেন সেলিম চৌধুরী। এ টাকা আত্মসাতের জন্যই সেলিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে মোহাম্মদ আলী। পরিকল্পনা মতে ৩১ মার্চ বিকেলে সেলিম ভোলাইলের ঝুটের গোডাউনে গেলে আলোচনার এক পর্যায়ে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন ফয়সাল। এতে সেলিম চৌধুরী মাটিতে পড়ে গেলে আরো কয়েকটি আঘাত করা হয়। এরপর ফয়সাল একাই সেলিমের হাত পা বেঁধে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মাটি খুঁড়ে চাপা দেয়। তখন মোহাম্মদ আলী ও তার আরো লোকজন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে দেখেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।