শুক্রবার (১২ এপ্রিল) নগরীর জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা গলিতে নীরবে এ দখলের ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিষয়টি সবার নজরে আসে।
নাদেল সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের পাশের সিলগালা থাকা দোকানটি প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম নাদেলের লোকজন দখলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সংশ্লিষ্টরা।
দোকানটি দখলে নেওয়ার পর এর নাম দেওয়া হয়েছে নাদেলের মালিকানাধীন অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলিয়ে উইনার প্রেস। এ ঘটনায় সিলেট শহরজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শুক্রবার শহীদ নূর হোসেন ব্লক ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী সিলগালা থাকা দোকানটি আওয়ামী লীগ নেতার হয়ে দখলে নেন। এসময় তারা দোকানের দরজার তালা ভেঙে ফেলেন। দোকানের সামনে উইনার প্রেস নাম দিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। এছাড়া দোকানের ভেতরে থাকা প্রেসের মালামাল স্থানান্তর করে ফেলেন।
পরে এ ঘটনা জানতে পেরে শনিবার ঘটনাস্থলে যান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ। তারা বিষয়টি নিয়ে এ দিন দুপুরে তাৎক্ষণিক বৈঠকে বসেন।
কয়েকটি সূত্র বলছে, প্রায় দুই শতক জায়গায় থাকা দোকানটি জাল দলিলের মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালীরা কয়েকবার বেচাকেনা করেন। যে কারণে ২০১৮ সালে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দোকানটি সিলগালা করে দেন। এতোদিন দোকানটি বন্ধই ছিল।
সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডার সব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, ভবনটি ১৯৭৫-৭৬ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এখানে একই ছাদের নিচে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল জেলা, সদর ও দক্ষিণ সুরমা অফিস অবস্থিত। আগে মহানগর কমান্ডও এই ভবনেই ছিল।
এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম নাদেল লোকজন দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মালিকানা জায়গার দোকান দখলে নিয়ে নিজের প্রেসের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। একটি স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের জায়গা দখল হয়ে গেলে বাকি থাকে কী? প্রশ্ন রাখেন কমান্ডার।
এ বিষয়ে শফিউল আলম নাদেল বাংলানিউজকে বলেন, যিনি বিক্রি করেছেন, তার কাগজপত্র দেখেই কিনেছি। বিক্রেতার নামে ভূমির কাগজপত্র, খাজনা, হোল্ডিং ট্যাক্স, পর্চা, মাঠ পর্চা, এসে রেকর্ড ও নামজারি সবই রয়েছে। যারা অভিযোগ দিয়েছেন, তাদের ভিত্তি কি আছে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ।
তিনি আরো বলেন, বিক্রেতা আমাকে দখল সাজিয়ে দিয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট কেন দোকানটি সিলগালা করবেন? এ বিষয়ে বিক্রেতা তাকে কোনো কিছু জানাননি। আর সিলগালা করার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উভয়পক্ষকে তলব করলে অভিযোগকারী পক্ষ কাগজ নিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমাণ্ডের নেতাদের ভূমির কাগজপত্র নিয়ে যাননি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এনইউ/টিএ