বরিশালের নানা আয়োজনের মধ্য তিন দিনব্যাপী বৈশাখি উৎসবের আয়োজন করেছে। এরমধ্যে ১২ ও ১৩ এপ্রিল ছড়াগান, লোকসংগীত, লোকনৃত্যু ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পহেলা বৈশাখের সকাল পৌনে ৮টায় নজরুল সাংস্কৃতিক জোট বর্ষবরণের সূচনা সংগীত পরিবেশন করবেন। এরপর সেখানে গুণিজন ও মুক্তিযোদ্ধাদের রাখি পরানো ও সন্মাননা দেওয়া হবে। অশ্বিনী কুমার হল ও হল প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী লোকজ সংস্কৃতি প্রদর্শন ব্যতিত বৈশাখ আয়োজনে সঙ্গীত, নৃত্য ও যাত্রাপালা পরিবেশন করবেন গণশিল্পী সংস্থা, প্রান্তিক, বরিশাল থিয়েটার ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যদল।
এদিকে প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা বৈশাখের আয়োজন করা হয়েছে।
বিএম কলেজ বৈশাখ উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ছাত্র নেতা আতিকউল্লাহ মুনীম জানান, বৈশাখের আগের দিনে পুরো ক্যাম্পাসে আলপনা আঁকা হবে। ১৪ এপ্রিল সকালে ঢাক উৎসবের মধ্য দিয়ে শুরু হবে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানমালার আনুষ্ঠানিক যাত্রা। এরপর রাখি বন্ধন উৎসব, লাঠি খেলা, বায়োস্কোপ প্রদর্শন থাকছে দুপুর পর্যন্ত। বিকেলে কলেজ মাঠে মেলার আয়োজন ও সন্ধ্যায় কনসার্টে গান পরিবেশন করবে অ্যাসেস ব্র্যান্ড গ্রুপ।
অপরদিকে ববিতে চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নববর্ষ পালনের ডাক দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম জানান, সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পহেলা বৈশাখের দিন সকাল ১০টায় অমঙ্গল দূর করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে। বেলা ১১টায় মুড়িমুড়কি বাতাসার আপ্যায়ন, দুপুর ১২টায় যেমন খুশি তেমন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দুপুর ১টায় হাড়িভাঙ্গা প্রতিযোগিতা, বিকেল ৩টায় উন্মুক্ত আলোচনা সভা ও সাড়ে ৪টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এসব অনুষ্ঠানে অবশ্যই মেয়ের শাড়ি ও ছেলেরা লুঙ্গি পরে আসতে হবে বলে জানান তিনি।
বরিশালের বিভিন্ন উপজেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈশাখী উৎসব ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আর এসব আয়োজনকে ঘিরে র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে গোটা বরিশালজুড়ে।
বরিশাল সাংস্কৃতি সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু কর বলেন, পহেলা বৈশাখ পুরো জাতি উপদযান করে। এর ব্যাপকতা আরো ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। যারা বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করছেন তাদেরও সরকারিভাবে সহায়তা করা উচিত, আর যেসব এলাকায় সম্ভব হচ্ছে না সেখানে সরকারের উদ্যোগে এ উৎসব উদযাপন করা। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম বাংলার গ্রামীণ ও প্রাচীন ইতিহাস-এতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারে।
চারুকলা বরিশালের সদস্য ও সংস্কৃতিজন সুশান্ত ঘোষ বলেন, দিনে দিনে শোভাযাত্রার আয়োজন বাড়লেও মেলার আয়োজন কমে যাচ্ছে। এসব আয়োজন প্রতিটি মহল্লায় ছড়িয়ে পড়া প্রয়োজন। যেখানে মানুষের যোগাযোগ বেশি সেখানেই মেলার আয়োজন করা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এমএস/এএটি