ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৩ দশকে মঙ্গল শোভাযাত্রা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
৩ দশকে মঙ্গল শোভাযাত্রা মঙ্গল শোভাযাত্রা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: মঙ্গল শোভাযাত্রা, যার শুরুটা হয়েছিল আনন্দ শোভাযাত্রা নামে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের চেতনা বুকে ধারণ করে বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পালনের প্রয়াস থেকে ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় এর যাত্রা শুরু হয়। চারুশিল্পী সংসদের ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে অসাম্প্রাদায়িক চেতনা ধারণ করে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে হাজারও মানুষ। দেখতে দেখতে গৌরবের ২৯ বছর পেরিয়ে ইউনেসকোর স্বীকৃতি পাওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা এবার পূর্ণ করছে তিন দশক।

চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় ১৯৮৯ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে এ শোভাযাত্রা হয়ে আসছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।

অশুভ শক্তিকে দূর করে শুভ বার্তা ছড়িয়ে দিতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। ৩০ বছরের মাইলফলক অর্জন করা সত্যিই আনন্দের।

এবার শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য করা হয়েছে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের ৪৮ নম্বর কবিতার ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’ চরণ। শোভাযাত্রার প্রতিকৃতির মধ্যে রয়েছে বাঘ, ঘোড়া, উল্টা কলস, প্যাঁচা, কাঠঠোকরা এবং বাঘ ও বকের শিল্পকর্ম। সার্বিক বিষয় মিলে আনন্দঘন পরিবেশে প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষবরণের অনুষ্ঠান উদযাপন হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে এটার জন্য সময় বেঁধে দেওয়াকে সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। একটা সময় সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। সাম্প্রতিককালে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে মানুষ বেশি হচ্ছে না। কিন্তু মঙ্গল শোভাযাত্রার আবেদন আছে, থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে উৎসব উদযাপনের জন্য আহ্বান করা হয়, বরাদ্দ থাকে। কিন্তু নিরাপত্তার নামে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রোগ্রাম শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে শোভাযাত্রার বিরোধীতাকারীরা উৎসাহিত হয়। এসব কারণে জোটের পক্ষ থেকে রবীন্দ্র সরোবরে প্রোগ্রাম আয়োজন করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাদমান শাকিল বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালির প্রধান অসাম্প্রদায়িক সামাজিক চর্চা। দেশের সাধারণ মানুষের ঐক্য এবং একইসঙ্গে শান্তির বিজয় ও অপশক্তির অবসানের লক্ষ্যে সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ চর্চার প্রবর্তন করা উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মাস্টার্সের ছাত্রী মাহবুবা স্মৃতি বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় আমি আশা করবো, সমাজ থেকে সব অন্যায় ঘুচে যাক। ধর্ষকদের উপর্যুক্ত শাস্তি হোক, অপরাধ কমে আসার মধ্য দিয়ে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। নারী পাক তার পূর্ণ স্বাধীনতা ও অধিকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, নববর্ষ আমাদের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। নববর্ষের প্রেরণায় আমাদের মধ্যকার সুপ্ত মানবিক মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা নতুনভাবে জাগ্রত হয়, মানুষে মানুষে গড়ে উঠে সম্প্রীতি। নববর্ষ সবার জীবনে অনাবিল মঙ্গল, সুখ, শান্তি, আনন্দ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক- এটাই কামনা করি।

বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
এসকেবি/টিএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।