ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাদ্রাসায় পড়া দিতে না পারায় শিশুর ওপর মধ্যযুগী বর্বরতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
মাদ্রাসায় পড়া দিতে না পারায় শিশুর ওপর মধ্যযুগী বর্বরতা

পঞ্চগড়: দশ বছর বয়সী শিশু তুহিন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে হাফেজ হয়ে মৃত বাবার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বুক ভরে দোয়া করবে। পাশাপাশি লাঘব করবে শ্রমজীবী মায়ের কষ্ট।

এমন আশা নিয়েই মৃত নেজামুল হকের স্ত্রী তাহমিনা তার একমাত্র শিশু সন্তান তুহিনকে স্থানীয় এক মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু মাদ্রাসায় পড়া দিতে না পারায় শিক্ষকের মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হয়েছে শিশু তুহিন।

শিক্ষকের ব্যাতের আঘাতে শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ব্যথার যন্ত্রনায় ছটফট করা শিশুটি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বগুলাহাটি চারপাড়া নূরানী মাদ্রাসায় শিক্ষক রুবেল হোসেন মধ্যযুগীয় ভাবে শিশুটির উপর নির্যাতন চালায় বলে জানা যায়।  

শিশু তুহিন একই এলাকার মৃত নেজামুল হকের ছেলে।

শিশু তুহিন বাংলানিউজকে জানায়, পড়া দিতে না পারায় রোববার সন্ধ্যায় বেধরক মারধর করেছে হুজুর। ওই দিন থেকেই বাড়ি যেতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু যেতে দেয় নি। পরে সোমবার (২৯ এপ্রিল) পালিয়ে বাড়ি যাই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার থেকেই বাড়িতে আসতে বা মারধরের ব্যাপারটি কাউকে না জানাতে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল শিশুটির ওপর। ব্যথায় কাতর ও জ্বর জ্বর ভাব নিয়ে কোনো মতে লুকিয়ে দুপুরে সে বাড়িতে যায়। পরে তার মা গোসল করাতে নিয়ে গেলে আঘাতের চিহ্ন দেখে। পরে মায়ের চিৎকার ও আর্তনাদ শুনে গ্রামের লোকজন দ্রুত এসে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে ভজনপুর বাজারে নিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদে জানায়। এরপর তাকে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা যায়।

শিশু তুহিনের মা তাহমিনা বাংলানিউজকে জানান, আমি আমার ছেলেকে গোসল করাতে নিয়ে গেলে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। কিভাবে একজন শিক্ষক হয়ে আমার ছেলের উপর এমন অমানবিক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক রুবেল হোসেনের বিচার ও শাস্তি চাই।

ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) মোকছেদ আলী বাংলানিউজকে জানান, শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।

বাংলাদেশ সমং: ০২০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।