শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ও দোকানে এ অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ৭টি দল। এগুলোর মধ্যে অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের নেতৃত্বে মূল দলটি অভিযান চালায় কারওয়ান বাজার, ধানমন্ডি এবং নিউমার্কেট এলাকায়।
এ সময় অভিযানে আরও ছিলেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাসুম আরেফিন, আফরোজা রহমান এবং ইন্দ্রাণী রায়সহ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
অভিযানে বেশিরভাগ দোকানেই নিষিদ্ধ ঘোষিত ৫২টি পণ্যের কোনটিই পায়নি বাজার মনিটরিং টিম। তবে কারওয়ান বাজার ও নিউমার্কেটের কয়েকটি দোকানে নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা কয়েকটি পণ্য বিক্রির জন্য মজুদ অবস্থায় পায় মনিটরিং দল। এগুলোর মধ্যে মোল্লা সল্ট এবং ডুডল ব্র্যান্ডের নুডলস অন্যতম।
এ সময় নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মানায় কারওয়ান বাজারের নাসির স্টোরকে ১০ হাজার টাকা এবং নিউমার্কেটে জব্বার স্টোর ও বিসমিল্লাহ স্টোরকে ২ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, বিক্রি নিষিদ্ধ পণ্যের বেশিরভাগ পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফেরত নিয়ে গেছে।
নিউমার্কেটের দোকান ব্যবসায়ী মোরশেদ আলী বলেন, বেশিরভাগ পণ্যই কোম্পানিগুলো ফেরত নিয়ে গেছে। আমার দোকানে যেটি পাওয়া গেছে সেটি এখনও ফেরত নেয়নি, তাই রয়ে গেছে। কোম্পানিগুলো নিয়ে গেলে তো আর আমরা সেগুলো রাখি না, তাই না?
এদিকে যেসব দোকানে এসব নিষিদ্ধ পণ্য পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর কোনটিকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হচ্ছে। আবার কোনটিতে অল্পমাত্রায় আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।
তবে রোববার (১৯ মে) থেকে এসব পণ্য বিক্রি করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে বলে জানান ভোক্তা অধিকারের কর্তারা। প্রয়োজনে দেওয়া হবে জেল।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, আমরা বিএসটিআই এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করে এসব পণ্য বিক্রির জন্য নিষেধ করতে বলেছি। এরপরে ব্যবসায়ীদের আর এসব পণ্য বিক্রির পেছনে কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। আজ বাজারগুলোতে বেশিরভাগ জায়গায় আমরা এসব পণ্য পাইনি। কিছু জায়গায় পেয়েছি, সেখানে অল্প জরিমানা করেছি। আগামীকাল ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে আমাদের কার্যালয়ে একটি সভা হবে। তারপরেও যদি এসব পণ্য বিক্রি হয় তাহলে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব পণ্য বাজার থেকে ফেরত নিচ্ছে সেগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের সামনে নষ্ট করতে হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যেসব পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো সেগুলো যেন আবার অন্য নামে বা অন্য কোনো উপায়ে বাজারে আসতে না পারে সেদিকে আমরা নজর রাখছি। এ জন্য আমাদের (ভোক্তা অধিকার, বিএসটিআই এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ) উপস্থিতিতেই সেসব পণ্য নষ্ট করতে হবে।
নিষিদ্ধ পণ্যগুলো ছাড়াও বাজার মনিটরিং-এর নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করে মনিটরিং টিম। এ সময় আমদানি অনুমোদন না থাকলেও বিদেশি পণ্য অনুমোদন এবং সেগুলোতে প্রয়োজনীয় তথ্য সম্বলিত লেবেল না থাকায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের অপরাধে মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৯
এসএইচএস/এমজেএফ