পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী সাগর ফৌজদারী মামলার আসামি হওয়ায় তার নিয়োগ আপনা আপনি বাতিল হয়ে গেছে।
বরগুনা থানা সূত্রে জানা যায়, সাগরসহ রিফাত হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষায় মো. সাগরের রোল নম্বর ছিল ১০৮। পিরোজপুর সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শাহনেয়াজ, ভোলার লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান এবং বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন স্বাক্ষরিত উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নামের মেধা তালিকায় ৪০ নম্বর পেয়ে ১৮তম স্থান অধিকার করেছেন সাগর।
তিনি বরগুনা সদর উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল লতিফ মাস্টারের ছেলে।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা মেসেঞ্জারে ০০৭-এ যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে সাগর বলেন, রিফাতের ওপর হামলার সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। জিরো জিরো সেভেন রিফাত হত্যার পরিকল্পনার ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ। এ গ্রুপে রিফাত হত্যার পরিকল্পনার কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
রিফাত হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপ ০০৭-এর কথোপকথন ঘেঁটে দেখা যায়, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দিন বুধবার সকাল ৮টা ৬ মিনিটের সময় রিফাত হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী গ্রুপে লেখেন, ‘০০৭ এর সবাইরে কলেজে দেখতে চাই। ’ উত্তরে মোহাম্মাদ নামের একজন লেখেন, ‘কয়টায়। ’ নয়ন ফরাজির লেখা ‘০০৭ এর সবাইরে কলেজে দেখতে চাই। ’ এর উত্তরে বরগুনায় কনেস্টবল পদে পুলিশের চাকরি পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ সাগর সম্মতিজ্ঞাপনসূচক এবং বিজয়ের প্রতীক ভি (v) সিম্বল দিয়ে উত্তর দেন। এরপর মাহমুদ আবার রিফাত ফরাজীকে মেনশন করে লেখেন ‘কয়টায় ভাই। ’ এরপর রিফাত ফরাজী উত্তর দেন ‘নয়টার দিকে। ’
সাগর বাংলানিউজকে বলেন, আমি ঢাকার একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। বরগুনা এসেছি ২২ তারিখ পুলিশে চাকরি পেতে বাছাই পর্বে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য। রিফাত শরীফের ওপর হামলার আগের দিন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভুয়া চিকিৎসায় আবদুল্লাহ নামে একজন মৃত্যুর ঘটনায় আমরা সবাই মানববন্ধন করেছিলাম। এরপর রিফাত শরীফের ওপর হামলার দিন সকালে আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি ওই মেসেজটি। পরে আমি বুঝিনি যে নয়টায় কলেজে থাকতে হবে। আমি ভেবেছি ওই মানববন্ধনেরই কিছু। পরে আমি একটি লাইক দিয়েছি। এরপর আমি বের হয়ে গেছি। পরে আর কিছু হয়েছে কি-না, তা আমি দেখিনি। পরে আমি রেজাল্ট আনতে গেছি।
রিফাত শরীফের ওপর হামলার সময় তিনি কলেজে ছিলেন না জানিয়ে বলেন, ঘটনার সময় আমি আমার ভাইবা পরীক্ষার রেজাল্ট আনতে গিয়েছিলাম। পরে আমি সাড়ে ১১টা নাগাদ সেখান থেকে আসি।
নয়ন এবং রিফাত ফরাজীর সঙ্গে পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সাগর জানান, দুই বছর আগে আমি বরগুনা এসেছি। এরমধ্যে আমি দুইমাস বরগুনা এবং বাকী সময় আমি ঢাকাতেই ছিলাম। একদিন রাস্তা দিয়ে আসি তখন এলাকার তানভীর আমাকে ডেকে নিয়ে যায় এবং বলে আপনার বাসা কই?। তখন আমি বলি, ‘আমি এখানে নতুন। ’ তখন রিফাত ফরাজীর কথা বলে - ‘এলাকায় আসছেন নতুন। এই ভাইরে চিন্না রাখেন। ভাইর কথামতো চলতে হবে এলাকায় থাকতে হলে। ’
বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রিফাত হত্যার ঘটনায় যদি সাগর সম্পৃক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
**রিফাত হত্যা: কনস্টেবল পদে পরীক্ষায় ১৮তম হয়েছেন সাগর!
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এনটি/এসএইচ