তবে রাজশাহীতে এখনও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়নি। শনিবার (১৩ জুলাই) পর্যন্ত কোনো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হননি।
জানতে চাইলে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এরই মধ্যে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সকল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কমিউনিটি ক্লিনিক স্যাটেলাইট ক্লিনিকগুলোতে ডেঙ্গুর সর্তকতা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র রামেক হাসপাতালের সঙ্গে সিভিল সার্জন অফিসের সমন্বয় রয়েছে। হাসপাতালে রোগী আসছে কি-না সে ব্যাপারে তারা রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান তিনি।
ডা. কাজী মিজানুর রহমান বলেন, রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত কোনো ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। এরপরও সর্বাত্মক সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কারণ স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা না দিলেও রাজশাহীর অনেক মানুষ ঢাকায় যাতায়াত করছেন। সেখানে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী ফিরে আসার ঘটনাও ঘটতে পারে।
বর্তমানে এই আশঙ্কাটাই বেশি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সিভিল সার্জন বলেন, ডেঙ্গু রোগীর মূল চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে রামেক হাসপাতালে। এরপরও উপজেলা পর্যায়ে থাকা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্যাটেলাইট ক্লিনিকগুলোকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। তারা যেন প্রাথমিক ব্যবস্থাপনা শেষে রোগী পেলে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে পারেন সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন ডেঙ্গুর প্যাটার্ন চেঞ্জ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রোগী কোমায় চলে যাচ্ছে। আগের মতো জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ এখন কম দেখা যাচ্ছে।
এজন্য ডেঙ্গুতে ভয় বেশি বলেও মনে করেন ডা. কাজী মিজানুর রহমান।
জনসাধারণকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে বাড়ির আশপাশে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে এবং নোংরা পানিতে কোনোভাবেই যেন ডেঙ্গু মশা ডিম পাড়তে বা বংশ বিস্তার করতে না পারে সে জন্য সবাইকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এছাড়া মশারি ছাড়া দিনে বা রাতে না ঘুমাতে হবে। আর ঢাকায় গেলে বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন এই চিকিৎসক।
এদিকে, রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তাই রাজশাহীও ঝুঁকির বাইরে নেই। প্রতিদিন বহু মানুষ নানান কাজে ঢাকায় যাচ্ছেন। আবার ফিরেও আসছেন
এভাবেও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে সব ধরনের ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।
এখন ডেঙ্গু মোকাবেলায় সবসময় তৈরি থাকছেন চিকিৎসকেরা। ডেঙ্গু রোগের ক্ষেত্রে এখানে যা সরঞ্জাম রয়েছে তা দিয়ে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে তারা সক্ষম। পাশাপাশি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকেও পর্যাপ্ত রক্তের চাহিদা দেওয়া আছে। এজন্য রক্তের চাহিদা তারা মেটাতে পারবেন।
ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তারা ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা তৈরি করেছেন। এরই মধ্যে রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। হাসপাতালের ১৭নং কেবিনকে আধুনিকায়ন করে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় আলাদা ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এখনও কোন রোগী আসেননি।
তিনি বলেন, গত বছর তিনজন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এজন্য এবারও সেই হিসেব ধরেই সব প্রস্তুতি শেষ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশে সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
এসএস/এমএ