জানা গেছে, বেশিরভাগ মৃত্যুই অসাবধানতাবশত বা দুর্ঘটনাবসত কারণে হয়েছে। তাই আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যানুযায়ী, গত শনিবার (১৩ জুলাই) ঝালকাঠির রাজাপুরের দক্ষিণ সাউথপুরে বৈদ্যুতিক তার সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার (৫৫) নামে ব্যাটারিচালিত এক ইজিবাইক চালকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার ছেলে আব্দুর রহমান (২৬)।
শুক্রবার (১২ জুলাই) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হওয়া বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার চরগাধাতলী মহল্লার এইচএসসি পরীক্ষার্থী সুরাইয়া জান্নাত খাদিজা (১৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। সে গৌরনদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে।
একইদিন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে সাহেব আলী সিকদার (৫০) নামে গাছকাটা এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।
এছাড়াও এ দিন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মিলন হোসেন (৩৫) নামে এক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে বাড়ির ছাদে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান মগড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রায়হান।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কৃষক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। কৃষক কামাল হোসেন (৪০) ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩০) নিজ বসতবাড়ি সংলগ্ন পাটক্ষেতে বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়া তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।
বুধবার (১০ জুলাই) বরিশালের বানারীপাড়া থানা কমপ্লেক্স সংলগ্ন নির্মাণাধীন একটি ভবনে রড তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শহিদুল ইসলাম খান (২৩) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বরিশাল নগরের রুপাতলীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান মাহাতাব হোসেন (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক।
রোববার (৭ জুলাই) ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এনামুল হক মিয়াজী (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একইদিন পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে মারা যান কাদের আকন (৮০) নামে এক বৃদ্ধ।
এছাছা বুধবার (৩ জুলাই) পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জামাল হাওলাদার নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত পানি সরবরাহের জন্য বৈদ্যুতিক মোটরে সংযোগ দিতে গেলে বিদ্যুতায়িত হন তিনি।
বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জিএম প্রকৌশলী শংকর কর বলেছেন, বিদ্যুৎ সম্পর্কে জনসাধারণকে অধিক সচেতন হতে হবে। যেসব খালি স্থান থেকে বৈদ্যুতিক তার টানা হয়েছে, এখন সেসব স্থানে গৃহ কিংবা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যার কারণে ভবনের বেলকুনি কিংবা ছাদের উপরে বৈদ্যুতিক তারের অবস্থান। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, ঝড় কিংবা দুর্যোগে তার ছিঁড়ে পড়লে আমাদের কাছে তৎক্ষণিকভাবে কোনো অভিযোগ আসে না। যখন ওই ছেঁড়া তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে কেউ একজন মারা যান, তখনই কেবল আমরা জানতে পারি। এক্ষেত্রে তার ছিঁড়ে পড়লে স্থানীয়দের বিশেষ করে জনপ্রতিনিধিদের উচিত হবে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ বিভাগকে জানানো।
শংকর কর বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশব্যাপী প্রকল্পের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুতের ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগ (ঘর-বাড়ির ছাদ ও বেলকুনি ঘেঁষা সংযোগ তার) গ্রহকদের বিনা খরচে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এমএস/আরবি/