কিন্তু রাজনৈতিক কারণে মকবুল হোসেনকে কোচবিহার থেকে বহিষ্কার করে তৎকালীন প্রশাসন। পরে সপরিবারে রংপুর চলে আসেন।
পড়ুন>>যেভাবে পতন হয় এরশাদের
বসবাসের এক পর্যায়ে রংপুর আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন মকবুল। হয়ে যান এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা। ‘স্বৈরাচার’ তকমা পাওয়া হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জীবনীগ্রন্থ ‘আমার কর্ম আমার জীবন’ এ এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।
এরশাদ লিখেছেন, রাজনীতির কারণে ‘শাস্তি’ দিয়ে কোচবিহার ছাড়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন কোচবিহারের তৎকালীন প্রধান কমিশনার। কোচবিহার ছিলো মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুর শাসিত করদ মিত্ররাজ্য।
ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পর ১৯৪৯ সালে মহারাজা ও ভারত সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে কোচবিহারের শাসন ব্যবস্থা একজন প্রধান কমিশনারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। প্রধান কমিশনার নিযুক্ত হন ভিআই নান্নাজাপ্পা। ১৯৫০ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা হয় কোচবিহার।
স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম জোতদারদের সমন্বয়ে গঠিত কোচবিহার স্টেট কাউন্সিলের সভায় ভারতীয় ইউনিয়নে যোগদানের বিষয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়।
বিতর্কিত দ্বি-জাতি তত্ত্বের কারণে বিভাজিত ভারতবর্ষের প্রভাব পড়ে সেখানেও। কাউন্সিলের প্রায় সব সদস্য পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পক্ষে অবস্থান নিলেও একজন হিন্দু সদস্য বিরোধিতা করেন। মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুর ভারতীয় ইউনিয়নে যোগদানের পক্ষে অবস্থান নেন।
ওই সময়ে স্টেট কাউন্সিলের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘হিতসাধনা সভা’ কোচবিহারের প্রতিটি থানায় সভা-সমিতির মাধ্যমে ভারতবিরোধী প্রচারণা চালাতে থাকে।
মুসলিম সদস্যরা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতে আরও কয়েকজনের সঙ্গে এরশাদের বাবা আইনজীবী মকবুল হোসেনকেও কোচবিহার থেকে বহিষ্কার করা হয়।
মকবুল হোসেন তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে চলে আসেন রংপুরে। অপর বহিষ্কৃতরা পরে কোচবিহারে ফিরলেও মকবুল হোসেন তার ছেলে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে থেকে যান রংপুরেই।
১৯৫০ সালে ক্রয় সূত্রে ঠিকানা হয় রংপুর মহানগরীর নিউ সেনপাড়ার বর্তমান (স্কাইভিউ) বাড়িতে। অবশ্য এর কয়েক বছর আগে ১৯৪৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যয়নের জন্য রংপুরে এসেছিলেন এরশাদ।
থাকতেন কারমাইকেল কলেজের জিএল হোস্টেলে। আরও আগে থেকে তার বড় বোন নাহার ও ভগ্নিপতি সিরাজুল হক রংপুরে থাকতেন বলে নিজের বইয়ে উল্লেখ করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এমএ/