দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ জুলাই) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েস কারান্তরীণ মিজানকে গ্রেফতার দেখানোর এ আদেশ দেন।
এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গত ১৬ জুলাই সংস্থাটির ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যলয়-১ এ দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান শেখ মো. ফানাফিল্যা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
ওইদিন-ই তদন্ত কর্মকর্তা মিজানকে ঘুষ প্রদানের মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন আদালতে। আদালত ২১ জুলাই আসামি ডিআইজি মিজানের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল। আর ডিআইজি মিজানের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন এহসানুল হক সমাজী।
নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে দুদক। কিন্তু এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডিআইজি মিজান।
গত ২ জুন মিজানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেন দুদকের কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছির। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিজান দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন এনামুল বাছিরের সঙ্গে কথোপকথনের একাধিক অডিও রেকর্ড। যদিও এনামুল বাছির এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোটভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়েছে।
গত ১ জুলাই হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন মিজান। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে কাস্টডিতে নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
গত ২ জুলাই ডিআইজি মিজানকে আদালতে হাজির করা হয়। তখন তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় বিয়ে গোপন করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছিল ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে।
এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরে নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে তাকে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
আর দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় গত ২৫ জুন মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
এমএআর/এমএ