ঢাকা, বুধবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ‘বিজনেস হাব’ গড়তে মহাপরিকল্পনা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৯
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ‘বিজনেস হাব’ গড়তে মহাপরিকল্পনা

ঢাকা: পদ্মাসেতু প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। এই সেতুর আশীর্বাদ পড়বে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটেও। এখন এই নৌরুট মানেই যাত্রী ও যানবাহন পারাপার মনে হলেও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটকে আধুনিক নৌবন্দর হিসেবে রূপ দিতে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। 

সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, পদ্মাসেতু নির্মিত হলে যখন এই নৌরুটে যাত্রী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ কমে যাবে, তখন এটিকে গড়ে তোলা হবে বিজনেস হাব বা বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে। তখন ভারী মালামাল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হবে এই ঘাট।

আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো হবে এই বন্দর দিয়ে। এখান থেকে নদীপথে সারাদেশে পণ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করবে সরকার। পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারি মালামাল প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে দিতেও এই নদীবন্দর ব্যবহার করা হবে। আর কার্গো বা পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য সব ধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা গড়ে তোলা হবে।  

এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেওয়া হয়েছে ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় আধুনিক সুবিধাদিসহ নদী বন্দর আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্প। ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৭২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সরকারি অর্থায়নে চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। এ রুটে প্রতিদিন ১৯টি ফেরি, ৬০-৯০টি লঞ্চ চলাচল করে। নির্বিঘ্নে ফেরি চলাচল ও যানবাহন পারাপারের জন্য পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে যানবাহন এবং যাত্রীদের সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র দেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং সড়কপথে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই ঘাট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য সারাদেশে পণ্য পরিবহনের জন্য এখানে বিসনেজ হাব গড়ে তুলবে সরকার। প্রকল্পের আওতায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ঘাটের উভয় পাড়ে ৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এ ঘাটকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নদী খনন করবে। শুধু ঘাটের উভয় পাশেই ৪৫ লাখ ঘন মিটার ড্রেজিং করা হবে।  

কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য এসব জমিতে গড়ে উঠবে বহুতল টার্মিনাল ভবন, এর আয়তন হবে ১২ হাজার ২ বর্গমিটার। নদীবন্দরে থাকবে সুবিশাল পার্কিং ইয়ার্ড। ১ হাজার ৩৪০ মিটারের একটা স্টিল জেটি থাকবে। নির্মিত হবে ২২টি পন্টুন। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেন পদ্মায় বিলীন না হয় সেজন্য উভয় পাড়ে ৮০০ মিটার নদীশাসন কাজ করা হবে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ঢাকাসহ দেশের পূর্ব-উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপনে ১৯৪৫ সালে এই ঘাট চালু হয়। নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর বিষয়টি মাথায় রেখে সড়কপথে চাপ কমিয়ে সব ধরনের পণ্য সারাদেশে নৌপথে ছড়িয়ে দিতে এই ঘাট ঘিরে সরকার নতুন পরিকল্পনাটি নিয়েছে।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ভোলা নাথ দে বাংলানিউজকে বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা করছি। এখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আধুনিক নদীবন্দর গড়ে তুলবো। নদীপথে সারাদেশের পণ্য পরিবহনে বিজনেস হাব গড়ে তুলবো। এতে খরচা কম অন্যদিকে সড়কপথে চাপও কমবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৯
এমআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।