নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট দুই হাজার ৭৬৯টি মহিষ লালন-পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। অথচ কয়েক বছর আগেও এ সংখ্যা ছিল শতকের ঘরে।
মহিষের প্রধান খাদ্য কাঁচা ঘাসের উৎস বিবেচনায় লালপুর উপজেলার পদ্মার চর এলাকা এটি পালনের উপযোগী। এছাড়া চলনবিল অধ্যুষিত বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর ও সিংড়াসহ জেলার সব উপজেলায় কম-বেশি মহিষ পালন করা হচ্ছে। খামারগুলোতে গরুর পাশাপাশি জায়গা করে নিচ্ছে মহিষও।
পদ্মার চর এলাকার পালপাড়া গ্রামের খামারি মো. জঈমুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বাপ-দাদার সময় থেকে মহিষ পালন করছি। বর্তমানে আমাদের খামারে দুই শতাধিক মহিষ রয়েছে।
এবারের ঈদে নিজেরাও মহিষ কোরবানি দেবেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে মহিষ বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। দেশি ও বিহারি জাতের প্রতিটি মহিষের দাম লাখ টাকার ওপরে।
নাটোর সদর উপজেলার গোবিন্দপুর ঘাট এলাকার খামারি রেজাউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবারই প্রথম ঈদ উপলক্ষে আমার খামারের চারটি মহিষ মোটাতাজা করেছি। এরই মধ্যে খামার থেকেই দু’টি মহিষ বিক্রি করেছি দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। বাকি দু’টি তিন লাখে বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
সৌখিন খামারি রেকাত আলী বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় গরু আর মহিষের সমাহারে খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। এবারের কোরবানিতে বৈচিত্র্য আনতে তার খামারের পাঁচটি মহিষই তিনি কোরবানি দেবেন।
লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মহিষ পালনের আগ্রহ বাড়ছে এলাকায়। মহিষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বলে তেমন রোগ নেই বললেই চলে। এর দৈহিক বৃদ্ধিও বেশি। খাদ্যের গুণাগুণ বিবেচনায় মহিষের মাংসে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম বলে স্বাস্থ্যসম্মত। সবদিক বিবেচনায় মহিষ পালন অত্যন্ত লাভজনক।
নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মহিষের রোগ তুলনামূলকভাবে কম। তবে বর্ষাকালে গলা ফোলা, পেট ফোলা রোগ দেখা দেয়। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যার ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত নয়। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে জেলায় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে মহিষ পালনের পরিধি বাড়াতে খামারিদের সহযোগিতায় কার্যকর সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৯
এসআরএস