চলতি মৌসুমে নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার প্রায় ২ শতাধিক পরিবার। এদেরই একজন হাজেরা বিবি।
সন্তান-পরিজন থেকেও যেন একা হাজেরা বিবি। এরই মধ্যে হারিয়েছেন শেষ সম্বল নিজের বসতভিটা। স্বামীর মৃত্যুর পর নিজের বসতভিটা নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় পৃথিবীতে নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে তার। ছেলেদের সংসার নিয়েই টানাটানি। মায়ের খোঁজ আর কতটুকু রাখবেন!
শিবচর উপজেলার বন্দোরখোলা ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী গ্রামের নাম কাজিরসূরা। গ্রামের রাস্তায় দাঁড়ালে পদ্মার গর্জন কানে ভেসে আসে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে কাজীরসূরা গ্রামের বন্দোরখোলা ইউনিয়ন পরিষদে ত্রাণের চাল নিতে আসেন বৃদ্ধা হাজেরা বিবি। স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আব্দুর রহমান নিজ এলাকার ভিটেমাটি হারানো প্রায় ২শ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। ত্রাণ নিতে আসা হতদরিদ্রদের মধ্যে হাজেরাও একজন।
ত্রাণের ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি লবণ ও ১ লিটার তেল পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
জানতে চাইলে পাশের পদ্মা নদী দেখিয়ে তিনি জানান, বন্দোরখোলা ইউনিয়নের মফিতুল্লাহ হাওলাদারের কান্দি গ্রামে ছিল তার বাড়ি। যা এখন পদ্মার মধ্যে। তিন ছেলে থাকলেও তেমন সাহায্য করেন না তারা। নিজের জন্য যতটুকু দরকার রান্না করেন।
তিনি আরও জানান, নদীতে ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে বর্তমানে নদী থেকে দূরে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। পরিত্যক্ত জায়গায় তার এক ছেলে এসে ছোট্ট ঘর তুলে দিয়ে গেছেন। ত্রাণের চাল দেওয়ার কথা শুনে অনেক দূর থেকে হেঁটে ইউনিয়ন পরিষদে এসেছেন। হাজেরা বিবির মতো অনেক মানুষই প্রতিবছর অসহায় হচ্ছে পদ্মার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৯
ওএইচ/