ঢাকা, বুধবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘আইনসিদ্ধ’ কাজ না করায় সচিবের ওপর ক্ষুব্ধ ইসি মাহবুব

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৯
‘আইনসিদ্ধ’ কাজ না করায় সচিবের ওপর ক্ষুব্ধ ইসি মাহবুব

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) মো. আলমগীরের বিরুদ্ধে ‘আইনসিদ্ধ’ কাজ না করার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। মতামত সত্ত্বেও কমিশন সভায় দেওয়া নিজের বক্তব্য কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভূক্ত না করায়  এমন ক্ষোভ এ নির্বাচন কমিশনারের।

এ নিয়ে মাহবুব তালুকদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা ও সচিবকে একটি আনঅফিসিয়াল (ইউও) নোটও দিয়েছেন। অন্য কমিশনারদের ইউও নোটের অনুলিপি দিয়েছেন।

এতে তিনি অধিকার খর্বের অভিযোগও এনেছেন।

মাহবুব তালুকদার ইউও নোটে উল্লেখ করেন, ‘গত ২১ জুলাই ২০১৯ তারিখে আমি নির্বাচন কমিশনের ৫০তম সভায় উপস্থিত ছিলাম। ওই সভায় আমি ২৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন সম্পর্কে রূপগঞ্জ উপজেলার ‘কাঞ্চন’ পৌর এলাকার শান্তিপ্রিয় জনগণের নামে প্রচারিত কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। এতে উক্ত এলাকার জনগণ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভীতিমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ওই নির্বাচনটি যেন অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়, সে সম্পর্কে আমি কমিশন সভায় বক্তব্য রাখি। ’

‘নির্বাচন কমিশনের ৫০তম সভার কার্যবিবরণীর খসড়া আমার কাছে পেশ করা হলে, আমার বক্তব্য তাতে অন্তর্ভূক্ত না থাকায় আমি নথিতে লিখি-নির্বাচন কমিশনের ৫০তম সভায় আমি রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছিলাম। বিষয়টি কার্যবিবরণীভূক্ত করে পুনরায় পেশ করা যেতে পারে। ’

‘নথিটি আমি সচিবের নিকট ফেরৎ পাঠাই। সচিব মহোদয় আমার নিকট পুনরায় নথি পেশ না করে, আমাকে পাশ কাটিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে কার্যবিবরণীটি অনুমোদন করিয়ে নেন। আমার কাছে বিষয়টি আইনসিদ্ধ বলে মনে হয়নি। এতে আমার অধিকার খর্ব হয়েছে। ’

নোটে মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমার বক্তব্য কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ না করার যদি কোনো সঙ্গত কারণ থাকে, তা আমাকে অবহিত করা প্রয়োজন ছিল। ইতোপূর্বে কমিশন সভায় বক্তব্য পেশের জন্য আমাকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েও পরে তা পেশ করতে দেওয়া হয়নি। ’

‘নির্বাচন কমিশন সভায় আমার উপস্থাপিত বক্তব্য যদি কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভূক্ত না করা হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন সভায় আমার উপস্থিতিরও কোনো আবশ্যকতা থাকে না। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। ’

মাহবুব তালুকদারের উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইসি সচিব মো. আলমগীরকে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের দুইবার নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কমিশন সভা বর্জন করেছিলেন। তখন তিনি বাকস্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ এনেছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি ইউও নোটও লিখেছেন তিনি।

মাহবুব তালুকদার বিভিন্ন সময় ইসির সমালোচনা করে আলোচনায় ছিলেন সংসদ নির্বাচনের পূর্বে। কারাবন্দি বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন বলেও শুনানিতে রায় দিয়েছিলেন মাহবুব।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৯
ইইউডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।