ঝড়ের কবলে পড়ে গভীর সমুদ্রে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যাওয়ায় মৃত্যুর কুপ থেকে ফিরে আসা জেলে মাহমুদ রোববার (৪ আগস্ট) দিনগত রাত ১২টার দিকে বাংলানিউজের কাছে এভাবে মৃত্যুর বর্ণনা দিচ্ছিলেন।
ফিরে আসা জেলে মাহমুদ নোয়াখালী জেলার মো. ওমর আলীর ছেলে।
মৃত্যুর কুপ থেকে ফিরে আসা জেলে মাহমুদ বলেন, রাত ৩টার দিকে ১৭ জেলের মধ্যে আমিসহ ৫ জেলে ট্রলারের ব্রিজের ওপরে ছিলাম। বাকি ১২ জেলে ট্রলারের ব্রিজের নিচে ঘুমানো ছিল। হঠাৎ ঝড় শুরু হলে ট্রলারটি উল্টে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমিসহ ৪জন জেলেকে ভাসতে দেখি, কিন্তু বাকিদের দেখিনি। প্রায় ৭ ঘণ্টা গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকি। এর মধ্যে অনেক ট্রলার আমার কাছ দিয়ে গেলেও হাত ইশারা দিয়ে বাঁচার আকুতি জানাই। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে এফবি আরিফ নামে একটি ট্রলারের জেলেরা আমাকে উদ্ধার করে।
ভাসতে দেখা ৪ জেলের জীবন নিয়ে শঙ্কা না থাকলেও ট্রলারের ব্রিজের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা ১২ জেলের জীবন অনিশ্চিত বলে যোগ করেন তিনি।
বৈরী আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগরে ঢেউয়ের তোড়ে ১৭ জেলে নিয়ে এফবি জাকিয়া ট্রলার ডুবে যায়। ৭ ঘণ্টা পর মাহমুদ নামে এক জেলে উদ্ধার হলেও ট্রলারসহ ১৬ জেলে দু’দিনেও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর আগে শনিবার (৩ আগস্ট) দিনগত রাত ৩টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরের পুর্ব লাল বয়া এলাকায় ঘুমন্ত অবস্থায় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার তাফালবাড়িয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মালিকানাধীন এফবি জাকিয়া নামে একটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১৭ জেলে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার ৭ ঘণ্টা পর ভাসমান অবস্থায় এফবি আরিফ নামে একটি ট্রলারের জেলেরা মাহমুদ নামে একজন জেলেকে উদ্ধার করে।
এদিকে ডুবে যাওয়া ট্রলার ও জেলেদের উদ্ধারের জন্য বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এফবি মনোয়ারা ও এফবি নীল সাগর নামে দুইটি ট্রলার সাগরে পাঠানো হয়েছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে দুইটি ট্রলার সাগরে পাঠানো হয়েছে। ট্রলার দুইটি মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো খবর আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৯
এএটি