ঢাকা, বুধবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় শাহিন বাহিনীর আতঙ্কে গৃহবন্দি ব্যবসায়ীর পরিবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৯
খুলনায় শাহিন বাহিনীর আতঙ্কে গৃহবন্দি ব্যবসায়ীর পরিবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনায় বড় ভাই শাহিন বাহিনীর চাঁদাদাবিতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বাহিনীর লোকজন প্রায়ই খুলনা মহানগরের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিরবে চাঁদাবাজি করছেন। বাহিনীটির আতঙ্কে এক ব্যবসায়ী ও তার পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে।

সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য জানান গৃহবন্দি হয়ে পড়া ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী সাইফুল লিখিত বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি সময়ে খুলনা মহানগরে বড় ভাই শাহীন নামে একজন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের আবির্ভাব ঘটেছে।

নগরের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিরব চাঁদাবাজিতে নেমেছে তিনিসহ তার ক্যাডার বাহিনী। যার শিকার আমি নিজেও। চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করতে পারবো না এমন হুমকি ও ফরমান জারি করায় চরম আতঙ্কে বসবাস করছি। শাহিনের সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ওরফে রাঙ্গা রফিক ও সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকার এক সময়ের আতঙ্ক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হিরুর অন্যতম সহযোগী রবিউল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমি শাহিন গ্রুপকে তিন দফায় ৬৪ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। গত ১ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে শাহীন আবারও নগরের ময়লাপোতা মোড়ে তার আড্ডাস্থলে আমাকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি করেন। পরে নগরের সুলতান ভল্কানাইজিং টায়ারের দোকানের ভেতরে নিয়ে আমার কাছে চার লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। সেখান থেকে আমাকে আবার নগরের রাধূনী হোটেলের দোতলায় নিয়ে যান। সন্ধ্যার ভেতর টাকা না দিলে আমাকে ও আমার সন্তানদের গুম করে ফেলার হুমকি দেন শাহিন। এক পর্যায়ে আমার কাছে থাকা একটি ফাইল নিয়ে যান। যাতে জমি-জমার গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ও চেকের মুড়ি বই ছিল। আমি একা থাকায় সেখানে কোনো প্রকার উচ্চবাক্য না করে চলে আসি। এরপর বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা করে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করি। গত ১ আগস্ট সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় এ বাহিনীর প্রধান শাহীনসহ ওই গ্রুপের ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি (নং-০৩)। এ মামলার দুই নম্বর আসামি মাসুমকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামলার অন্য আসামিরা মামলা তুলে না নিলে আমার ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ক্ষতি সাধনসহ শান্তিতে সববাস করতে দেবে না ও আমার ব্যবসা পরিচালনা করতে দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। আমার সন্তানের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আমি গত ৩ আগস্ট রাতে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় আমার ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করি। শাহিন একাধিক মামলারও আসামি। আমার মতো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এ নিরব চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। এরা ডেকে নিয়ে নানা ভাবে ভয়ভীতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খুলছেন না।

সাইফুল বলেন, অতীতে এরশাদ শিকদারসহ মৃতপুরী খুলনার অনেক সন্ত্রাসীর পতন হয়েছে। এখন নব্য শাহিন ওরফে বড় ভাই বাহিনীর পতন সময়ের দাবি।

তিনি প্রশাসনের কাছে তার ও পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানান।

এ বিষয়ে বড় ভাই শাহিনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৯
এমআরএম/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।