পিরানহা রাক্ষুসে মাছ হওয়ায় অন্যান্য মাছের বংশ বিস্তারে এ মাছ মারাত্মক হুমকি। যে কারণে বাংলাদেশে পিরানহা মাছ উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ।
এদিকে, রাজধানীর অনেক মাছ বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে অসাধু ব্যবসায়ীরা পিরানহা বিক্রি করছেন দেদারছে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম কম হলেও পিরানহা বিক্রিতে লাভ বেশি।
লক্ষ্মীপুর পৌর সমসেরাবাদ এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন পিরানহা কিনে বাড়ি ফেরার পথে কেউ একজন তাকে বলেছেন এ মাছ রাক্ষুসে, রূপচাঁদা নয়। পরে তিনি ফের বাজারে গিয়ে মাছ ফেরত দিয়েছেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, সামুদ্রিক রূপচাঁদা মাছ বলে আমার কাছে ১৭০ টাকায় দামে এক কেজি মাছ বিক্রি করেছেন বিক্রেতা। পরে রাক্ষুসে মাছের পরিচয় পেয়ে ফেরত দিয়েছি। এভাবে প্রতিদিন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পিরানহা বিক্রি করা হচ্ছে। এতে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই। লক্ষ্মীপুর মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী পিরানহা দিয়ে ঢালা সাজিয়ে রেখেছেন। রূপচাঁদা বলে বিক্রিও করছেন। কি মাছ জানতে চাইলে বিক্রেতা বলেন রূপচাঁদা। কোথায় থেকে এ মাছ আসে জানতে চাইলে বিক্রেতা বলেন, লক্ষ্মীপুরে চাষ হয়। কুমিল্লা থেকেও আসে। তবে লক্ষ্মীপুরের কোথায় পিরানহা চাষ হয় তা জানা সম্ভব হয়নি।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র হাবিবুর রহমান বলেন, প্রায় প্রতিদিন সকালেই লক্ষ্মীপুর মাছ বাজারে পিরানহা বিক্রি হয়। তিনি রাক্ষুসে পিরানহা মাছের বিষয়ে জানেন, যে কারণে ওই মাছ তিনি কিনেন না। তবে এ মাছ সম্পর্কে যারা অবগত নয় তারা কিনে খাচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের জলজ পরিবেশের সঙ্গে পিরানহা সংগতিপূর্ণ নয়। পিরানহা রাক্ষুসে স্বভাবের তাই জলজ প্রাণীদের খেয়ে ফেলে। দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য এগুলো হুমকি স্বরূপ। এ কারণে সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তর পিরানহার পোনা উৎপাদন, চাষ, বংশ বিস্তারও ক্রয়-বিক্রিয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, লক্ষ্মীপুরের কোথায়ও পিরানহা চাষ হয় কিনা তা তাদের জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা হবে। যদি কেউ পিরানহা চাষ করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও নিষিদ্ধ ওই মাছ ধ্বংস করা হবে। হাট-বাজারে অভিযান পরিচালনা করে পিরানহা জব্দ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
এসআর/আরআইএস/