ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

নদী ভাঙন আতঙ্কে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের বাসিন্দারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৯
নদী ভাঙন আতঙ্কে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের বাসিন্দারা নদী ভাঙনের কবলে বসতঘর। ছবি: বাংলানিউজ

ব‌রিশাল: বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই নদী বেষ্টিত বরিশালের বিভিন্ন এলাকা ভাঙতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও আড়িয়াল খাঁ নদ, মেঘনা, কালাবাদর ও সন্ধ্যা নদী তীরবর্তী বরিশালের বাবুগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বেশকিছু এলাকা ভাঙতে শুরু করেছে। 

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার, উলানিয়া, চানপুর, দড়িরচর-খাজুরিয়া ও শ্রীপুর এবং পার্শবর্তী হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের বেশকিছু নদীর তীরবর্তী এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে।  

নদী ভাঙনের ফলে ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে হতাশা আর আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রতি বছর ভাঙনের তীব্রতায় সব থেকে বেশি পাল্টে যাচ্ছে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বেশকিছু গ্রামের মানচিত্র।

হিজলার ধুলখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আকতার হোসেন জানান, গত কয়েকদিনের তীব্র ভাঙনে ঐতিহ্যবাহী আলীগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি হুমকির মুখে রয়েছে স্থানীয় বেশকয়েকটি বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ভূমি অফিস, বসত-ঘরসহ বাজার-ঘাট।

স্থানীয়রা জানায়, হিজলা উপজেলার সীমান্তে ধূলখোলার মেঘনা নদী তীরের আলীগঞ্জ বাজার এখন নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ার দ্বার প্রান্তে। ইতোমধ্যে এ বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন।  

এদিকে, মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মালেক খান বলেন, বছরের পর বছর ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে এ ইউনিয়নে। বর্ষার সময় কালাবদরসহ আশপাশের নদীগুলো খুবই আগ্রাসী হয়ে ওঠে। এ বছরও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর বাজার, দু’টি বিদ্যালয়ের ভবন, মাদ্রাসাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ফসলি জমি বিগত সময়ে বিলীন হয়েছে নদী ভাঙনে।  

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক খোরশেদ তালুকদার বলেন, ভিটে বাড়িও ছিল, ধানের জমিও ছিল, কিন্তু নদীর ভাঙনে সব শেষ হইয়া গেছে।

যদিও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তাদের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে স্থানীয়রা নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে এখন নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলার ভাঙন কবলিত বেশকিছু এলাকায় নদী শাসন ও বাঁধের কাজ চলছে। তবে জরুরিভাবে ভাঙন রোধেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি বলেন, এ বছর ভাঙনের পেছনে উত্তরাঞ্চলের বন্যার একটি বিষয় রয়েছে। কেন না দেশের উত্তরাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানিই আমাদের এ অঞ্চল হয়ে সাগরের দিকে যাচ্ছে। আর বন্যার কারণে নদীতে স্রোতের গতিও বেশ বেড়ে গেছে। ফলে ভাঙনের পেছনে স্রোতের গতিও কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।