সাভার উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পশুর হাটটি বন্ধের নির্দেশ দিলেও প্রভাবশালী মহলকে কাজে লাগিয়ে হাটটিতে চলছে দেদারছে পশু বেচা-কেনা।
জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে সাভার পৌরসভা কর্তৃক প্রায় কোটি টাকায় উলাইল এলাকার এই হাট ইজারা দেওয়া হলেও এবার ঈদুল আজহায় জেলা প্রশাসন অনুমোদন দেয়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনের ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উলাইল বাস স্ট্যান্ড এলাকার অবৈধ পশুর হাটে ইতোমধ্যেই আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। ফলে ব্যস্ততম মহাসড়কটিতে অতিরিক্ত মানুষ ও পশু বোঝাই গাড়ির অতিরিক্ত চাপ লক্ষ্য করা গেছে। এতে করে ঈদযাত্রা শুরু হলে সড়কটিতে তীব্র যানজট ও ভোগান্তির সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে হাটটি নিয়ে গত মঙ্গলবার (৬ জুলাই) রাতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক চিঠি ইস্যু করা হয়। চিঠিতে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। যদিও হাট বন্ধে প্রশাসনের এ কর্তা ব্যক্তিরা অভিযান চালানোর কথা বললেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি।
এবিষয়ে সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, আমরা নির্দেশনা পাওয়ার পর হাটটি বন্ধে চিঠি দেওয়া ছাড়াও বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। তবে আমরা যখন যাই, তখন কেউ থাকে না, আবার চলে আসার পর তারা কার্যক্রম শুরু করে। আমরা কিছুক্ষণ পরপরই সেখানে যাচ্ছি, আবার যাবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কর্তৃক জারিকরা চিঠিতে দেখা যায়, চিঠিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনার কথার উল্লেখ করে মহাসড়কের পাশে গড়ে তোলা এ হাটটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সাভার পৌরসভার মেয়র, সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন।
অপরদিকে পৌরসভা থেকে জেলা প্রশাসক বরারর পাঠানো চিঠিতে দেখা যায়, সাভার পৌর এলাকার অবৈধ এ হাট বন্ধে সাভার পৌর কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। যার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ আরও বেশ কয়েকটি দপ্তরে।
তবে চিঠি চালাচালি আর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় অভিযান পরিচালনার কথা বলা হলেও এখন অবধি মহাসড়কের পাশে গড়ে তোলা অবৈধ হাটটি বন্ধ করতে পারেনি কেউ।
স্থানীয়রা বলছেন, উলাইলের এই পশুর হাটটি স্থানীয় একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। অসাধু এই সিন্ডিকেটটি কৌশলে চিঠি চালাচালির ফাঁকেই সব কিছু ম্যানেজ করে আসন্ন কোরবানির ঈদ পর্যন্ত হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে মনে করছেন তারা। মাঝ থেকে ইজারা না হওয়ায় প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কী-না তা জানতে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান বলেন, এই গরুর বাজার অবৈধ। আমরা ম্যাজিস্ট্রেট এবং সাভার মডেল থানার ওসিকে হাটটি বন্ধ করতে বলেছি। তাছাড়া পশুর হাটটির আয়োজকদের এটি বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। তারা যদি বাজার বন্ধ না করে তবে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৯
এসএইচ