ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

খাগড়াছড়িতে প্রকৌশলী কামাল হোসেন লাঞ্ছিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৯
খাগড়াছড়িতে প্রকৌশলী কামাল হোসেন লাঞ্ছিত

খাগড়াছড়ি: নিজ বিভাগের সহকর্মীদের কাছে ‘পাহাড়ের কিং’ নামে পরিচিত খাগড়াছড়ির জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. সোহরাব হোসেন। টানা ২৭ বছর ধরে একই কর্মস্থলে থাকায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
 

সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদাচরণের দায়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
 
এদিকে, বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সদ্য পদায়নকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. কামাল হোসেন নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সোহরাবের পরিবর্তে দায়িত্ব নিতে এসে লাঞ্ছিত হয়েছেন।


 

তিনি নিজ কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে খাগড়াছড়ি পার্র্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েলের নেতৃত্বে একদল যুবক প্রকৌশলী কামালকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
 
জানা যায়, গত ১১ জুলাই প্রকৌশলী কামালকে নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে খাগড়াছড়িতে পদায়ন করে মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে অতিরিক্ত দায়িত্বে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাবকে নতুন পদায়ন করা কর্মকর্তার কাছে ২৮ আগস্টের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তরের আদেশ জারি করা হয়েছিল। আদেশে সোহরাবকে শুধু বান্দরবান বিভাগের দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়।
 
এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রকৌশলী কামাল গত ১৬ জুলাই খাগড়াছড়িতে যোগদান করলেও ২৫ জুলাই অপর এক চিঠিতে পার্বত্য জেলা পরিষদ তাকে গ্রহণ না করার কথা জানিয়ে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে চিঠি পাঠায়।  

এদিকে, পার্বত্য জেলা পরিষদ অতিরিক্ত দায়িত্বে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাবকে ছাড়তে রাজি হচ্ছে না। এমন অজুহাত দেখিয়ে সোহরাব দায়িত্ব হস্তান্তর না করায় মন্ত্রণালয় ক্ষুব্দ হয়।
 
সর্বশেষ গত ৬ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সোহরাবকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।  

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সোহরাব সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী অসদাচরণের দায়ে বিভাগীয় মামলার আনীত অভিযোগসমূহ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ সময়ে তিনি শুধু মাত্র খোরপোষ ভাতা পাবেন।  

এদিকে, বুধবার দুপুরের দিকে প্রকৌশল কামাল নতুন পদায়নকৃত কর্মস্থলে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে ওই কার্যালয়ের কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে (দ্বিতীয় তলা) আকস্মিকভাবে একদল যুবক তার কার্যালয় থেকে কামালকে জোরপূর্বক ভবনের নিচে নামিয়ে আনে ও গালিগালাজ করে।
 
এ বিষয়ে প্রকৌশল কামাল বাংলানিউজকে জানান, ‘খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েলের নেতৃত্বে এক দল যুবক আমাকে কর্মস্থলে আসার পর হেনস্ত ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় তারা আমাকে আমার কার্যালয় ছেড়ে চলে যেতে বলে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে তারা চলে যায়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে হেনস্তা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রকৌশল কামাল।
 
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সঠিক নয়। পার্বত্য চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জেলা পরিষদের অনুমতি ব্যতিরে কেউ দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন না। এ বিষয়টি তাকে (কামাল হোসেন) বুঝিয়ে বলেছি মাত্র। ’
 
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘১০/১৫টি মোটরসাইকেলে একদল যুবক এসে নির্বাহী প্রকৌশলী কামালকে হুমকি দেয় এবং ১০ মিনিটের মধ্যে তার কার্যালয় ছেড়ে চলে যেতে বলে। তবে নতুন প্রকৌশলীর নিরাপত্তার কোনো সমস্যা নেই।  

এ ঘটনায় মামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি রশিদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৯
এডি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।