বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেল নাগাদ কীর্তনখোলাসহ ছয়টি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। আর বাকি নদীগুলোর পানি বাড়লেও এখনও বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি।
এর ফলে ভরা জোয়ারের সময় প্লাবিত হচ্ছে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। আর পানি বাড়ায় নতুন করে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে নদী তীরের মানুষের মনে। এরইমধ্যে বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বেশকিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম বাংলানিউজে জানান, পূর্ণিমার কারণে গত ৩ আগস্ট নদীর পানি কিছুটা বাড়লেও তা আবার নেমে যায়। তবে সেটা বিপদ সীমার কাছে আসেনি।
কিন্তু বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ করেই নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যার জরিপ অনুযায়ী বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদ সীমা (২৫৫ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে হিজলার নয়াভাঙ্গনী নদীর পানিও বিপদ সীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভোলার দৌলতখান পয়েন্টে মেঘনা নদীর পানি বিপদ সীমা রেখা (৩৪১ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীর পানি বিপদ সীমা রেখা (২৮১ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও আমতলীতে এ নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপদ সীমার (২০৮ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া এ নদীর বরগুনা পয়েন্টের পানি বিপদ সীমার (২৮৫ সেন্টিমিটার) রেখা অতিক্রম করে এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পাথরঘাটা পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার (২৮৫ সেন্টিমিটার) সমান্তরালে প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপদ সীমার (২৬৮ সেন্টিমিটার) ছুয়েছে। এছাড়া তেতুলিয়া, আড়িয়াল খাঁ, টরকী, সন্ধ্যা নদীসহ বরিশালের বেশকিছু নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম বলেন, বর্তমান আবহাওয়ার ও নিম্নচাপের কারণে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে গেছে। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানির চাপ বেড়ে গিয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করছে। তবে আবহাওয়ার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতই নদীর পানি কমে যাওয়ার ধারণা করছেন তিনি।
অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাইদ বাংলানিউজকে বলেন, উত্তরাঞ্চলের পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এজন্য দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে পানির চাপ একটু বেশি।
তিনি বলেন, বর্ষাকাল হওয়ায় বিভিন্ন নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখন যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাবার সম্ভাবনাও রয়েছে। বিশেষ করে পানি নেমে যাওয়ার সময় এ আশঙ্কা বেশি থেকে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি যেসব স্থানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে সেইসব এলাকায় ভাঙনরোধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/