ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অনলাইনেও জমজমাট কোরবানির পশু কেনাবেচা

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
অনলাইনেও জমজমাট কোরবানির পশু কেনাবেচা অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে কোরবানির পশুর বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঈদুল আজহা যত কাছে আসছে ততই বাড়ছে কোরবানির পশু কেনাবেচার হার। আর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কল্যাণে পশু কেনাবেচার এই বাণিজ্য চলে এসেছে অনলাইনেও। বাড়ি বসে অর্ডার করে বাড়িতেই পাওয়া যাচ্ছে কোরবানির পশু।
 

অন্তর্জাল জগৎ থেকে দেখা যায়, বিক্রয়.কম, দারাজ.কম.বিডি, বেঙ্গল মিট, সরোবর.কমসহ আরও বেশ কয়েকটি অনলাইন শপে কেনা যাচ্ছে কোরবানির পশু। দেশীয় ই-কমার্সের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সর্বপ্রথম বিক্রয়.কম কোরবানির পশু বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে।

২০১৫ সাল থেকে শুরু করে এবছরও নিজেদের প্ল্যাটফর্মে পশুর পসরা সাজিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে পশুর ধরন হিসেবে গরুই বেশি পাওয়া যাচ্ছে বিক্রয়.কমসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে। অনলাইন এ প্ল্যাটফর্মে ছাগল পাওয়া গেলেও তার সংখ্যা কম।
 
এসব প্ল্যাটফর্ম ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রজাতির গরু পাওয়া যাচ্ছে এখানে। স্থানীয় দেশীয় গরু, চট্টগ্রামের লাল গরু, মিরকাদিম, সিন্ধু ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া এবং নেপালের গরুও আছে। কিছু কিছু প্ল্যাটফর্মে আছে ক্রস প্রজাতির গরু। আছে ষাঁড়, গাভী, বলদ।
 
অনলাইন হলেও গরুর বিভিন্ন দিক গ্রাহকদের ভালো করে দেখার ও বোঝার সুযোগ করে দিয়েছে প্রযুক্তি। বিভিন্ন দিক থেকে তোলা ছবি, ভিডিওয়ের সন্নিবেশ আছে পশুর বিজ্ঞাপনে। এছাড়াও পশুর বিশেষ কোনোদিক বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আছে জুম করা স্থিরচিত্র।  
 
কোরবানির হাটের হৈ-হুল্লোড়, ভিড় ভাট্টা এড়িয়ে আরামে পশু কেনার সুযোগ থাকায় অনেকেই এর সুবিধা নিচ্ছেন। রাজধানীর একটি বায়িং হাউজের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ঈদের সময় এমনিতেই চাপ থাকে শিপমেন্টের। সাপ্তাহিক ছুটিও বাতিল হয়। এমন অবস্থায় হাটে যাওয়ায় এক সমস্যা। তাছাড়া সেখানকার ভিড়ভাট্টা আমার ভালো লাগে না। পশু কেনার জন্য অনেকগুলো টাকাও সঙ্গে রাখতে হয়। তাই নিরাপত্তাও একটা ইস্যু। কিন্তু অনলাইনে এতসব সমস্যা নেই। সেবার ধরন নতুন বলে প্ল্যাটফর্মগুলোও ভালো সেবা দেওয়ার মানসিকতা পোষণ করে। এমনকি গরু বাসায় হোম ডেলিভারিতে পাওয়া যায়। ছবির সঙ্গে মিল আছে কিনা তা দেখে মূল্য পরিশোধের সুবিধাও থাকে। নগদ টাকারও ঝামেলা নেই। চাইলে ক্রেডিট কার্ডেও মূল্য দেওয়া যায়। এসব সুবিধার কারণে এই ঈদেও একটি গরু আমি অনলাইনে কিনেছি।
 
অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির এমন আইডিয়া সম্পর্কে বিক্রয়.কমের প্রধান বিপণন ও বিক্রয় কর্মকর্তা ঈশিতা শারমিন বলেন, বিক্রয়.কম হচ্ছে অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনার অগ্রদূত। গত পাঁচ বছর ধরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিক্রয় কোরবানি পশুর পসরা নিয়ে আসছে। হাটে গিয়ে গরু কেনা আমাদের দেশে এক ধরনের উৎসব। তবুও অনেকেই আছেন যাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য হাটে যাওয়ার মতো সময় হয় না। অনেকে হয়তো আবার এমনিতেও যেতে চান না। এছাড়াও প্রবাসে থাকা অনেক বাংলাদেশি আছেন যারা দেশে পরিবারের জন্য গরু কিনতে চান। এদের সবার জন্য সহজ সমাধান দিচ্ছে বিক্রয়.কম। এখানে একজন ক্রেতা পশুর ছবি দেখতে পাচ্ছেন। চাইলে পশু বুকিং দেওয়ার পর আমাদের কাছে অথবা ফার্মে গিয়ে পশু দেখেও আসতে পারছেন। তাই দিনদিন এই খাতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
 
অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রিতে বিক্রয়.কম প্রচুর সাড়া পাচ্ছে দাবি করে ঈশিতা বলেন, বিগত বছরগুলোতে ঈদুল আজহায় আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রচুর সাড়া পেয়েছি। এ বছর আমরা গ্রাহকদের জন্য আরও বেশি সংখ্যক কোরবানির পশু নিয়ে এসেছি। প্রতিবছর গ্রাহক চাহিদা বৃদ্ধি পায়, আর আমরাও সেই অনুযায়ী আমাদের সেবার মান উন্নত করতে সচেষ্ট থাকি। গত বছর বিক্রয়ের সাইটে মেম্বারশিপ সার্ভিস নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রায় ৭০টি গবাদি পশুর খামার ব্যবসায়ী কোরবানির পশু বিক্রি করেন। এ বছর আশা করছি প্রায় ১৫০টি খামার ব্যবসায়ী আমাদের মেম্বারশিপ সার্ভিস নেবেন। এখানে রয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি গবাদি পশুর বিজ্ঞাপন, এরই মধ্যে তিন হাজারেরও বেশি বিক্রি হয়ে গেছে, আশা করছি পাঁচ থেকে ছয় হাজার এবার বিক্রি হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
এসএইচএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।