ঢাকা, রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুকে ‘বিশ্ববন্ধু’র আখ্যা কূটনীতিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৯
জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুকে ‘বিশ্ববন্ধু’র আখ্যা কূটনীতিকদের জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান

ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বিশ্ববন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বৈশ্বিক কূটনীতিকেরা। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুকে এ আখ্যা দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘে বাংলাদেশি স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী এভাবে আয়োজিত হয় বলে জানা যায়।

 

সভায় কূটনীতিকরা অত্যাচারিত মানুষদের প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদাহরণস্বরূপ বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে অত্যাচারিত মানুষদের জন্য তার সংগ্রাম ও অবদানের জন্য তাকে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্ববন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।  

আলোচনা সভায় জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবর উদ্দীন, সার্বিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি মিলান মিলানোভিক, কিউবার রাষ্ট্রদূত এনা সিলভিয়া রদ্রিগেজ এবাসকাল, ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি রিয়াদ এইচ মনসুর, বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।  

এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে প্রথমবারের মতো জাতির পিতার শাহাদতবার্ষিকীর এ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আমরা আগামী বছর বিশ্বব্যাপী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছি। সে উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি ২০২১ সালে উদযাপন করা হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।  

অন্যদিকে ‘বঙ্গবন্ধু ও বহুপাক্ষিকতাবাদ’ শিরোনামে কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন আনোয়ারুল করিম চৌধুরী।

ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের গভীর বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের উল্লেখ করে বলেন, ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন ভারতবাসী তাদের অকৃত্রিম বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা জানতে পারে তখন ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ মুহূর্তেই বিষাদে রূপ নেয়।  

বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শই আজ জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি। ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশকে উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এটি সম্ভব হয়েছে কারণ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সার্বিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি মিলান মিলানোভিচ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভিকা দাচিচ এর বাণী পড়ে শোনান। এই বাণীতে সার্বিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাবেক যুগোশ্লোভিয়ার রাষ্ট্রনায়ক জোসেফ ব্রোজো টিটোর যে বন্ধুত্ব ও গভীর সম্পর্ক তা তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুর বিখ্যাত উক্তি ‘বাংলার মানুষের প্রতি ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি, আর আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতাও এটা যে আমি তাদের অনেক বেশি ভালোবাসি’ উল্লেখ করেন।

কিউবার রাষ্ট্রদূত আনা সিলভিয়া রদ্রিগেজ আবাসকাল তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কিউবার দেওয়া অকুণ্ঠ কূটনৈতিক সমর্থনের কথা তুলে ধরেন। নির্যাতিতের পক্ষে ও মানবাধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর অনন্য সাধারণ নেতৃত্ব, প্রচেষ্টা ও সাহসের কথা বলতে গিয়ে তিনি ১৯৭৩ সালে কিউবার মহান নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সেই বিখ্যাত উদ্বৃতি ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি, তাই হিমালয় দেখার সাধ আর আমার নেই’ উল্লেখ করেন।

ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি রিয়াদ এইচ মনসুর ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গভীর ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, আজ ৪৪ বছর পর এই জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে যা এই বিশ্বনেতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি অনন্য উদ্যোগ।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।