শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাত থেকে শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত একটানা ছয় ঘণ্টার বিরামহীন বর্ষণে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, জেলায় গড় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ফলে তিনটি পৌরসভা ও নয়টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রায় ২৫০ মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মুশফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটু পানির কারণে আমাদের এলাকার জনসাধারণের চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। বাড়ি-ঘরে পানি উঠে গেছে। এক প্রকার পানিবন্দি হয়ে পড়েছি।
কাড়াপাড়া এলাকার ঘের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টির পানিতে আমার ঘেরসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ঘের ভেসে গেছে। এতে আমার প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সবজি চাষি রুহুল মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, টানা বর্ষণে বেগুন, পুঁইশাকসহ বেশ কিছু সবজির গোড়া পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে এখনই বৃষ্টি থেমে গেলে ক্ষতি কিছুটা পোষানো যাবে।
বাগেরহাট পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাশেম শিপন বাংলানিউজকে বলেন, ঘুম থেকে উঠেই ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের জন্য নিজেই কাজ শুরু করি। পৌরসভার পক্ষ থেকেও অনেক কর্মী এ কাজে নিয়োজিত ছিল। আশা করি বৃষ্টি কমলে দ্রুত পানির ভোগান্তি থেকে মুক্ত পাবে মানুষ।
বাগেরহাট পৌরসভার প্যানেল মেয়র তালুকদার আব্দুল বাকী বাংলানিউজকে বলেন, পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য জরিপ শুরু করা হয়েছে। আশা করছি এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আগামীতে পৌরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।
বাগেরহাট সদর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, দুই থেকে ২৫০ ঘের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সহস্রাধিক মৎস্য ঘের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বাগেরহাটে বছরের সর্বোচ্চ ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরফলে কিছু পানের বরজ ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৯
এনটি