সোমবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুরের চলন্তিকা মোড় সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তিতে রিকশাচালক শহীদ খলিফাকে পোড়া ঘরের মেঝেতে বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট জিনিসপত্র খুঁজতে দেখা যায়।
শহীদ খলিফার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ার চরের।
তার দু’মেয়ে কাজল ও রেখার বিয়ের জন্য অনেক কষ্টে আট আনা স্বর্ণের কানের দুল এবং ছয় আনা স্বর্ণের চেইন বানিয়ে রেখেছিলেন। ঘরের মধ্যে আরও ছিল টেলিভিশন-রেফ্রিজারেটরসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। আগুনের গ্রাস থেকে একটা সুতাও তিনি বাঁচাতে পারেনি।
শহীদ খলিফা বাংলানিউজকে বলেন, সারা জীবনের যা কিছু আয় করেছি। তা দিয়ে একটু একটু করে সংসার সাজিয়েছি । সবকিছুই আগুনে কেড়ে নিলো। তবে, আগুনে পরিবারের সদস্যদের কোন ক্ষতি হয়নি। আগুন শহীদ খলিফা সবকিছু কেড়ে নিতে পারলেও স্বপ্ন, আশা এবং মানসিক শক্তিটুকু কেড়ে নিতে পারেনি। তিনি আশাবাদী আবারও পরিশ্রম করবেন, শরীর যেহেতু সুস্থ আছে এসব জিনিস নতুন করে গড়তে একটু সময় লাগলেও অসম্ভব হবে না।
যেখানে বস্তিতে আগুন লাগার ঘটনায় ঘর পোড়া মানুষগুলো আহাজারি আর কান্নাকাটিই একমাত্র সম্বল, সেখানে একমাত্র ব্যতিক্রম দেখা গেলো এই শহীদ খলিফাকে। জীবনের চরম বাস্তবতায় এবং হতাশার মাঝে তার মানসিক শক্তি এবং আশার কথা হতাশায় নিমজ্জিত যেকোনো মানুষের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
এর আগে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। টানা ৩ ঘণ্টা ধরে ২৪টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত সাড়ে ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। তবে, পুরোপুরি নেভাতে নেভাতে বেজে যায় রাত দেড়টা। এর সঙ্গে পুড়ে যায় তিন হাজার পরিবারের স্বপ্ন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
আরকেআর/এএটি