তারা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আতংকিত। যেহেতু এই প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ খুবই সীমিত তাই ভবিষ্যৎ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সুরক্ষিত হয় না বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
বুধবার (২১ আগস্ট) মিয়ানমার এবং বাংলাদেশে কর্মরত ৬১টি স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে অবস্থানকারী পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, কারণ সেখানে সংঘাত বেড়েই চলেছে। বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড থেকে এ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি সপ্তাহের মধ্যে আনুমানিক তিন হাজার চারশ ৫০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাৎক্ষণিক প্রত্যাবাসনের সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ, স্বেচ্ছাকৃত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বানও জানায় এই ৬১টি এনজিও।
কারণ রাখাইন রাজ্যে এখনও রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার চর্চার ক্ষেত্রে কোনো অর্থপূর্ণ অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বাস্তুচ্যুত কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনার পরিসর খুবই সীমিত।
বৈষম্যমূলক নীতির কারণে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চলাচলের ক্ষেত্রে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপের পাশাপাশি পড়াশোনা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবিকার অধিকারের ক্ষেত্রে আরও সীমিত করে দেওয়া হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। এছাড়া ২০১২ সাল থেকে প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায় রাখাইন রাজ্যের শিবিরে আটকা পড়ে আছে, ফিরতে পারছে না নিজ বাড়িতে।
অন্যদিকে সীমিত করে দেওয়া হয়েছে মানবাধিকার সংস্থাদের প্রবেশাধিকার। তাই রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের মানবাধিকার স্বীকৃতি দেওয়া ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজের জীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া এমনকী মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত প্রদানসহ তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতেরও আহ্বান জানায় এনজিওগুলো।
এনজিওগুলো মনে করে, রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের সব সম্প্রদায় যাতে নিরাপদে থাকতে পারে, এবং প্রাথমিক পরিষেবা ও জীবিকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারে তা মিয়ানমার সরকারের নিশ্চিত করা উচিত।
বর্তমান সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে কর্মরত এই ৬১টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের অধিকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কিছু বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়।
১. রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ২. মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারকে সম্মান করা। ৩. শিক্ষা, জীবিকা ও সুরক্ষায় রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে সহায়তা। ৪. মধ্যম বা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান বের করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
টিআর/এএ