সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (বাকসু) সাবেক ভিপি ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ কৃষিবিদ ড. একেএম রফিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ড. মির্জা এম এ জলিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মির্জা জলিল বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, কৃষিই যেহেতু এদেশের জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস, তাই কৃষির উন্নতিই হবে দেশের উন্নতি। তিনি সব সময় সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলার কথা ভাবতেন। ভাবতেন কোঅপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে এগোতে পারলে কৃষির উৎপাদন ও সার্বিক উন্নয়ন দু’টিই মাত্রা পাবে।
মূল প্রবন্ধে কৃষিবিদ ড. একেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির ইতিহাসে একজন মহাপুরুষ, চির সংগ্রামী একজন জননেতা, ছিলেন বাংলার খেটে খাওয়া মানুষদের বন্ধু। তিনি বাংলার প্রত্যেক মানুষের জীবনের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজন আহার, কাপড়, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজের সুযোগ সৃষ্টির জন্য নিজেকে বিসর্জন দিয়েছেন। বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন আপসহীন।
তিনি বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরের জন্য প্রচেষ্টা শুরু হয় কৃষি বিপ্লবের। কৃষকের সব বকেয়া খাজনা ও সুদ তিনি মাফ করে দেন। বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। তার শুরুটা করেছিল বঙ্গবন্ধু এবং তার অসামাপ্ত কাজটুকু সম্পন্ন করছেন তার সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা।
সেমিনারে আলোচনা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. সোহেলা আক্তার এবং তুলা উন্নয়ন বোডের্র নির্বাহী পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. ফরিদ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহম্মদ।
কৃষিবিদ ড. সোহেলা আক্তার বলেন, কৃষি আধুনিকায়নে বিশ্বাসী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। উন্নত ও স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন। তার অবদানের জন্যই বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর বুকে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার অবদানের ফলস্বরূপ আজ আমরা ফল-ফুল সবজি-ফসলে পরিপূর্ণ।
কৃষিবিদ ড. মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভেতরে দূরদর্শিতা বৈশিষ্ট্য ছিল প্রখর। তিনি ভাবতেন দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কৃষি উন্নয়ন আবশ্যক। কৃষি উন্নয়ন করতে হলে ফলন বাড়াতে হবে। আর ফলন বাড়ানোর জন্য কৃষি গবেষণা প্রয়োজন। এই প্রয়োজন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক কৃষি উন্নয়নের জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পুনর্সংস্কার, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, ইক্ষু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনসহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. রিয়াজ আহম্মদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো। তাই তিনি কৃষিখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকারের পাশাপাশি কৃষি উন্নয়নের সৈনিক কৃষিবিদদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৯
এইচএমএস/এএ