ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বংশী নদীতে অভিযানের পরও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালু উত্তোলন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯
বংশী নদীতে অভিযানের পরও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালু উত্তোলন বংশী নদীতে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালু উত্তোলন। ছবি: বাংলানিউজ

ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ে বংশী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন কয়েক দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও বন্ধ করতে পারছে না নদী থেকে বালু উত্তোলন।

সোমবার (২৬ আগস্ট) ধামরাই উপজেলার বাসনা এলাকায় বংশী নদীতে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা বিভিন্ন মহলকে কাজে লাগিয়ে দেদারসে অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ধামরাইয়ের সানোরা ইউনিয়নের বাসনা এলাকায় বংশী নদীতে দু’টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও স্থানীয় নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রবিউল করিম রুবেলের নেতৃত্বেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

প্রশাসন ও এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে অবৈধ এ বালু উত্তোলনের মহাৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বংশী নদীতে দু’টি ড্রেজার বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিনের কর্মচারী রশিদ বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় নেতা রুবেলের মালিকানাধীন ড্রেজারের তিনি একজন শ্রমিক। ঈদের এক সপ্তাহ আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাদের দু’টি ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর আবারো দু’টি ড্রেজার বসিয়ে তারা বালু উত্তোলনের কাজ করে আসছেন। স্থানীয় একটি পুকুর ভরাট করে মাঠ তৈরির জন্য তারা বালু উত্তোলন করছেন বলেও জানান তিনি।

আনন্দ সরকার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এর আগে প্রশাসন ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেওয়ার পরদিন থেকেই দেদারসে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের কারণে তাদের বসতভিটা ও নদীর পাড়ের জমি হুমকির মুখে।

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দা নাছিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পাড়ে থাকা আমার একমাত্র সম্বল বাড়িটি হুমকির মুখে। তাই ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।

নদী পাড়ের বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজছাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত বিকট শব্দে ড্রেজার মেশিন চালানোর কারণে তার পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শুধু ড্রেজার মেশিন পোড়ালেই হবে না, অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল করিম রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে কোনো ড্রেজার বসানো হয়নি। নদীর পাশে মালিকানাধীন জমিতে ড্রেজার চালাচ্ছি। এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত তার ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দিয়েছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে বংশী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈদের আগেও বাসনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।  

তিনি বলেন, একই স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পরবর্তীতে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ইউএনও আবুল কালাম।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯
এসএমএকে/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।