ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

লোকজন বলছে ‘ধারালো অস্ত্র’, ‘মুক্তি’র দাবি ‘নিড়ানি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯
লোকজন বলছে ‘ধারালো অস্ত্র’, ‘মুক্তি’র দাবি ‘নিড়ানি’ কামারে দোকান থেকে জব্দ করা নিড়ানি। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ার কোটবাজার এলাকায় একটি কামার দোকান থেকে লোহার তৈরি এক ধরনের প্রায় সাড়ে ছয়শ’ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের বরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হচ্ছে সেগুলো ‘ধারালো অস্ত্র’। রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণের জন্য তৈরি করা হচ্ছিলো এসব। তবে যারা এই সরঞ্জাম বানাতে দিয়েছে, তারা বলছে এগুলো গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের ‘নিড়ানি’।

সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে কোটবাজারের কামার অধীর দাসের দোকানে অভিযান চালিয়ে এ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ সময় দোকান মালিক অধীর দাসকে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, লোহার তৈরি ধারালো এসব অস্ত্র রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণের জন্য তৈরি করা হচ্ছিলো। এ ধরনের অস্ত্র রোহিঙ্গাদের হাতে গেলে তা স্থানীয়দের জন্য হুমকি স্বরূপ।

তবে সরঞ্জামগুলো বানাতে দেওয়া বেসরকারি সংস্থা ‘মুক্তি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, বাড়ির আঙিনার আগাছা পরিষ্কারের জন্য মূলত এ ‘নিড়ানি’ ব্যবহার করা হয়। কক্সবাজারে ‘মুক্তি’র একটি কৃষি প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের জন্য এসব সরঞ্জাম বানাতে দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কামারের দোকান থেকে জব্দ করা জিনিসগুলোর নাম নিড়ানি। স্বাভাবিকভাবে বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার এবং গৃহস্থালি কাজে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে নিড়ানি হলেও কামারের দোকান থেকে জব্দ করা নিড়ানির মধ্যে একটু ডিজাইনের গরমিল আছে। এসব নিড়ানির মাথা একটু চিকন এবং ধারালো। তবে বেসরকারি সংস্থা মুক্তি আমাদের বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, এগুলো স্থানীয়দের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, স্থানীয় এবং রোহিঙ্গা যাদের দেওয়া হোক না কেন কেউ যদি এটির অপব্যবহার করতে চান তাহলে বিষয়টি উদ্বেগের।

এ বিষয়ে ‘মুক্তি’র প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের মধ্যে টেকনাফের হ্নীলায় আমাদের একটি কৃষিভিত্তিক প্রকল্প চালু রয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে কৃষির উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সার, বীজ, স্প্রে মেশিন এবং নিড়ানিসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ গণমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন। তবে এসব নিড়ানি রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণের বিষয়টি সত্য নয়।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের জন্য আমরা কক্সবাজারের মেসার্স কৃষি বিপনী নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার ৬০০টি নিড়ানিসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ সরবরাহের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা কোথায় এসব বানাতে দিয়েছে আমরা জানি না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এসব নিড়ানি হয়ে গেছে ‘ধারালো অস্ত্র’। মূলত এ নিড়ানি দিয়ে কৃষিকাজ ও বাড়ির আঙিনা এবং খড় পরিষ্কার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯
এসবি/আরআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।