নাগরিকরা বলছেন, মূলত সচেতনতার অভাবেই যত্রতত্র পলিথিন ফেলা হচ্ছে। চিপসের প্যাকেট ও পলিথিন ব্যাগসহ এ জাতীয় অপচনশীল দ্রব্য মাটিতে ফেলা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পলিথিন এমন একটি পদার্থ, যা মাটির সঙ্গে মিশতে শত শত বছর সময় লাগে। এটি মাটির অভ্যন্তরে গেলেও ক্ষয় হয় না বা মিশে যায় না। পলিথিনের রাসায়নিক পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। তাছাড়া এই পলিথিন স্যুয়ারেজ লাইনে আটকে গিয়ে পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়।
সরজমিনে গুলশান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পাশে যত্রতত্র পলিথিন, চিপসের প্যাকেট ও আবর্জনা ফেলা। ডাস্টবিন থাকলেও সেখানে ফেলা হচ্ছে না। রাজধানীর গুলশান-বারিধারা লেকও পলিথিনমুক্ত নয়। অভিজাত এলাকার এ লেকের পানিতে নিয়মিত ফেলা হচ্ছে পলিথিন ও ময়লা-আবর্জনা। পানিতে পলিথিন ও ময়লা ফেলায় নষ্ট হচ্ছে প্রকৃতি।
সম্প্রতি সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লেকের কোথাও কোথাও ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে লেকের পাড়। ফলে এক সময়ের স্বচ্ছ গুলশান লেকের পানি এখন দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত।
২০০২ সালের ৮ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পলিথিনের সব ধরনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুদ ও বিতরণ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই এ পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার।
শাহজাদপুর লেকপাড়ের ব্যবসায়ী মো. জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ পানিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করছে। যদি মানুষকে সচেতন করা না যায়, তাহলে এলাকার পরিবেশসহ ধ্বংস হবে লেক।
আরেক বাসিন্দা আব্দুল হক বলেন, একটু প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে লেকের পাশেই ছুটে যায় মানুষ। কিন্তু সেই লেকেও যত্রতত্র পলিথিন ও ময়লা ফেলায় এখানেও ফ্রেশ বাতাস নেই।
রাজউক (তৎকালীন ডিআইটি) ১৯৬১ সালে ‘গুলশান মডেল টাউন প্রকল্প’ গ্রহণ করে। একই সময়ে গ্রহণ করে ‘বনানী-বারিধারা প্রকল্প’। এ প্রকল্প দু’টিতে দু’টি লেক রয়েছে। একটি হচ্ছে বনানী মডেল টাউন ও গুলশান মডেল টাউনের মধ্যে, অপরটি গুলশান মডেল টাউন ও বারিধারা মডেল টাউনের মধ্যে এবং লেক দু’টির আয়তন ২শ একর। এর ৬০ শতাংশ হচ্ছে গুলশান-বারিধারা লেক এবং ৪০ শতাংশ হচ্ছে গুলশান-বনানী লেক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গুলশান-বারিধারা লেকের দায়িত্ব রাজউকের। এছাড়াও গুলশান সোসাইটিও দায়িত্বে রয়েছে। তাই পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করাও তাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, এখন যেহেতু সিটি করপোরেশন ডেঙ্গুর চিরুনি অভিযানে ব্যস্ত রয়েছে তাই আপাতত আমরা লেক নিয়ে ভাবছি না। তারপরও এ অভিযান শেষ হলে আমরা রাজউক ও গুলশান সোসাইটির সঙ্গে বসবো। বসে লেক পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
টিএম/এএ