ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পরিচ্ছন্নতায় সবার শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত চানাচুর বিক্রেতা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
পরিচ্ছন্নতায় সবার শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত চানাচুর বিক্রেতা চানাচুর বিক্রেতা জুনায়েদ খন্দকার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: একজন চানাচুর বিক্রেতা; পুরো সচেতন রাস্তাঘাট এমনকি ঢাকা শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে। সেজন্য তিনি চানাচুর বিক্রি করছেন আর এর ময়লা নিজেরই সঙ্গে রাখা একটি প্লাস্টিক ঝুড়িতে ফেলতে বলছেন ক্রেতাকে। এমনকি তিনি নিজেও সব ময়লা এই ঝুড়িতেই জমা করছেন, নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে ফেলবেন বলে।

এমন একটি দৃশ্য দেখে অবাক একজন ব্যবসায়ী; নাম আল মামুন। ওই বিক্রেতার কাছ থেকে চানাচুর নিয়ে সেটা খেতে খেতে মামুন তাকে বলছিলেন, বাহ! তুমি তো খুবই সচেতন।

নিজের ময়লা নিজেই সংগ্রহ করে ঝুড়িতে রাখছো। অথচ অনেক শিক্ষিত লোক বিষয়টিতে অজ্ঞ। তোমার এই পরিষ্কার সচেতনতা দেখে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত। তাহলেই ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার হতে থাকবে।

সম্প্রতি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে চানাচুর বিক্রেতা জুনায়েদ খন্দকার এমন জনসচেতনতামূলক কাজটি করছিলেন। তা দেখে মামুন ছাড়াও অনেকেই তার প্রশংসা করছিলেন। বলছিলেন, এভাবে সবাই কাজটি করলে ঢাকার রাস্তাঘাট সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। জুনায়েদের শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত বা কাজটি সবার অনুসরণ করা উচিত। জুনায়েদ খন্দকারের চানাচুরের দোকান।  ছবি: বাংলানিউজদেখা যায়, চানাচুর বিক্রেতা জুনায়েদ একটি টুলের ওপর বড় পাত্র সাজিয়ে রেখেছেন চানাচুরের। সেই টুলের পায়ার সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন একটি প্লাস্টিক ঝুড়ি। যে-ই তার চানাচুর খাচ্ছে, তাকেই তিনি অনুরোধ করে বলছেন, খাওয়া শেষে কাগজগুলো এই ঝুড়িতে ফেলতে। আশপাশ নোংরা করবেন না। পরিষ্কার দেখতে ভালো লাগে আমার শহর। ক্রেতারাও তার অনুরোধ রাখছেন। আগ্রহের সঙ্গে সবাই কাগজগুলো এই ঝুড়িতেই ফেলছেন। চানাচুর বিক্রেতা জুনায়েদ।  ছবি: বাংলানিউজ

বাংলানিউজের কথা হয় জুনায়েদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর কয়লার ঘাট এলাকায় থাকি। সারাদিন ঘুরে ঘুরে চানাচুর বিক্রি করি। বিকেল বেলা ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সামনে আসি।

তিনি বলেন, চানাচুর বানিয়ে কাস্টমারদের কাগজে করে দিতে হয়। অনেক সময় দেখেছি কাস্টমাররা চানাচুর খেয়ে এদিক-ওদিক কাগজগুলো ফেলে রাখেন। এতে পরিবেশ নোংরা হয়। আশপাশ নোংরা দেখা যায়। আমি চিন্তা করলাম আমার জন্যই আশপাশটা ময়লা হচ্ছে। আমারই কিছু একটা করা দরকার। তাই চিন্তা করে প্লাস্টিকের ঝুড়ি কিনে নিলাম। যার কাছেই চানাচুর বিক্রি করছি, তাকেই বলছি, চানাচুর খেয়ে কাগজগুলো আমার এই ঝুড়িতে ফেলে রাখুন। বাইরে কোথাও ফেলবেন না। এতে পরিবেশ নোংরা হয়।

চানাচুর বিক্রেতা এও বলেন, একসময় এই ঝুড়িটা ভরে গেলে একটা বড় পলিথিনে করে নির্দিষ্ট একটা ডাস্টবিনে নিয়ে ফেলে দিই। এ রকম যদি সব হকার ভাই নিজেদের ময়লা নিজেরাই সংগ্রহ করে ডাস্টবিনে ফেলেন, তাহলে ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
এজেডএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।