এ অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে দুই প্রকৌশলীকে শোকজ করেছেন গণপূর্ত বিভাগ চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ্ উদ্দিন আহাম্মদ।
ওই দুই প্রকৌশলী হলেন- রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সানাউল্লাহ ও একই বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জহির রায়হান।
জানা যায়, ভবনটির নির্মাণ করছে ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনর্সোটিয়াম লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতায় ভবনটি নির্মাণে এ ধরণের অনিয়ম হচ্ছে বলে গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছে শোকজের জবাব দিয়েছেন প্রকৌশলী এএসএম সানাউল্লাহ।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানায়, সম্প্রতি গণপূর্ত বিভাগ চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ্ উদ্দিন আহাম্মদ রাঙামাটি সদরে নির্মাণাধীন সিজেএম ভবন পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে তিনি পাঁচটি ভয়াবহ অনিয়ম খুঁজে পান। পরিদর্শন শেষে তিনি চট্টগ্রামে ফিরে এসে তাৎক্ষণিকভাবে দুই প্রকৌশলীকে শোকজ করেন। বিষয়টি গুরুতর হওয়ায় গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীকে অবহিত করেন।
আদালত ভবন নির্মাণে পাঁচটি গুরুতর অনিয়মের মধ্যে রয়েছে- পুরাতন সাঁটার দ্বারা ঢালাই করা, ভবনটির উত্তর দিকে ক্রটিপূর্ণ সাঁটারের কারণে ঢালাই কংক্রিট বেরিয়ে পড়ে কলামের সাইজের ত্রুটিপূর্ণ করা, ঢালাই কাজে প্রচুর হানিকম্ব সৃষ্টি হয়েছে যা আস্তর দ্বারা বন্ধ করা হয়েছে, সাইটের সার্বিক ব্যবস্থাপনা দুর্বল, এছাড়া কাজের অগ্রগতিও অত্যন্ত দুর্বল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্ত বিভাগের একাধিক প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, রাঙামাটিতে যে আদালত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে তা কোনো নিয়মই মেনে হচ্ছে না। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো রকমে একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যেসব সাঁটার দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে তা যেকোনো মুহুর্তেই ধসে পড়তে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তাদের মনগড়া রাঙামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভবনটির নির্মাতা ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনর্সোটিয়াম লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মমিনের সঙ্গে একাধিকবার এ বিষয়ে যোগাযোগ করলেও কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বাংলানিউজকে কোনো তথ্য না দিয়ে তিনি কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সানাউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যেসব অভিযোগ পেয়েছি তার সমাধান করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন মহলকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। ঠিকাদারকে কাজের মান ঠিক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিজিএম আদালত ভবনটি নির্মাণ শেষ হবে চলতি বছরের মধ্যে। বর্তমানে দ্বিতল ভবনের কাজ চলছে। কাজের মেয়াদকাল, ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতা এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিল ছাড়ের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (প্রকল্প কর্মকর্তা) এ বিষয়ে জানেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান যে মানের কাজ করে তা অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান সে মানের কাজ বজায় রাখতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৯
এনটি