ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পটুয়াখালীতে ওসির সহায়তায় ঘর পেলেন বীরাঙ্গনা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৯
পটুয়াখালীতে ওসির সহায়তায় ঘর পেলেন বীরাঙ্গনা  নতুন ঘরের সামনে ফুলবরু। ছবি: বাংলানিউজ

পটুয়াখালী: পটুয়াখালী সদর উপজেলায় পুলিশের সহায়তায় নতুন ঘর পেয়েছেন ফুলবরু নামে এক বীরাঙ্গনা। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ইটবাড়িয়ায় ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।

উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের বৃদ্ধ ফুলবরু।

একদিন সদর থানায় আসেন জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধে অভিযোগ দিতে। সরাসরি ওসির সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, তিনি ৭১'র বীরাঙ্গনা।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ফুলবরুর গ্রামের বাড়ি যান জমি-জমার বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য। সেখানে গিয়ে ফুলবরুর ঘরটি জরাজীর্ণ, দেখতে পেয়ে তাকে একটি ঘর বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এরপর সদর উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা লতিফা জান্নাতির কাছ থেকে ২ বান্ডিল টিন ও ৮ হাজার টাকা  সহযোগিতা নিয়ে বাকিটা নিজের টাকা দিয়ে ঘর বানানোর উদ্যোগ নেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।  

ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই তাকে আমার এই সম্মান। ফুলবরু একজন ত্যাগী নারী, তিনি দেশের জন্য তার সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তার স্বামী-সন্তান নাই। কষ্টে জীবন কাটছিল। তাই সাধ্যমত উদ্যোগ নিয়ে ঘর বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই ঘর আজ তাকে হস্তান্তর করা হলো।  

বীরাঙ্গনা ফুলবরু বলেন, আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল, যারা ঘর বানিয়ে দিয়েছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।  

পরে জানা যায়, এখনও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি তিনি। পাচ্ছেন না রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগ সুবিধা।
ফুলবরু স্বামীর ভিটা আঁকড়ে কোনোরকমে বেঁচে আছেন। তার স্বামীর নাম আজাহার মোল্লা।

পটুয়াখালী শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পশ্চিমে সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়ন। ১৯৭১ সালের ২ মে বেলা ১২টার দিকে ৩৫ থেকে ৪০ জন পাক হানাদার বাহিনী গানবোটে করে এলাকার কচা নদী দিয়ে পায়রা নদী অভিমুখে যাচ্ছিল। স্থানীয় রাজাকারদের ইঙ্গিতে হানাদারদের গানবোট নদী সংলগ্ন ইটবাড়িয়া বোর্ড স্কুলের পাড়ে ভেড়ে। হানাদাররা রাজাকারদের সহযোগিতায় প্রথমে এলাকার কাজী বাড়ি ও মোল্লা বাড়িতে হামলা শুরু করে। বাড়িঘরে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।
 
সেসময় পালাতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে ধরা পড়েন ফুলবরু। এরপর ১০ দিন সার্কিট হাউজের কক্ষে আটকে নিপীড়ন চালায় পাকিস্তানি সেনারা। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কচাবুনিয়া নদীর তীরে ফেলে রেখে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।