ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভোগান্তির অপর নাম মানিকগঞ্জ বিআরটিএ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯
ভোগান্তির অপর নাম মানিকগঞ্জ বিআরটিএ মানিকগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিস মানেই ভোগান্তি। এখানে দালাল ছাড়া আসলে নানা অজুহাতে ঘুরতে হয় সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের। আর এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়ে বিরক্ত ও অসহায় হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা।

মাঝে মধ্যে বিআরটিএ অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। এতে কিছুদিন দালাল চক্রের আসা যাওয়া বন্ধ হলেও বিআরটিএ অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য এসব দালাল পুষে রাখেন।

বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে নির্ধারিত ফি ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়ে লার্নার নিতে হয়। লার্নার ব্যবহার করে তিন মাস গাড়ি চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। দুই মাস পর লিখিত পরীক্ষা, ভাইবা, ফিল্ড টেস্ট দিতে হয়। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশন, বায়োমেট্রিক ছাপসহ আনুসাঙ্গিক কাজে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসে লাইসেন্স পাওয়া যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য লার্নার ফরম, লিখিত পরীক্ষা, ফিল্ড টেস্ট, বায়োমেট্রিক ছাপ, নবায়ন, গাড়ির ফিটনেস, রোড পারমিটসহ সব কাজ দালালের মাধ্যমে না করালে দিতে হয় ভুলের মাশুল। স্বাভাবিক নিয়মে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে যেখানে তিনমাস লাগার কথা সেখানে এক বছর সময় লেগে যায়। মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করতে দুই হাজার টাকা আর অন্যান্য যানবাহনের জন্য তিন হাজার টাকা নির্ধারিত থাকলেও দালালরা নিচ্ছে ৬-৭ হাজার টাকা। পদে পদে ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অনেকে অতিরিক্ত টাকা দালালদের মাধ্যমে দিয়ে করছে ড্রাইভিং লাইসেন্স।

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে আসা আলামিন বাংলানিউজকে বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে এসে এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে তা ভাবতেও পারি নাই। একেক সময় একেক ভুলের কথা বলে ঘোরাচ্ছে আমায়।  

দৌলতপুর থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা সফিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, লার্নার ফরম অফিস থেকে দেওয়ার কথা কিন্তু এটা সংগ্রহ করতে হয় পাশের ফটোকপির দোকান থেকে। সেই ফরম ইংরেজিতে পূরণ করতে হয় এবং ওই ফরম পূরণ করে জমা দিতে গেলে বিভিন্ন ধরনের ভুল ধরে ফেরত দেয় অফিসের (বিআরটিএ) লোকজন। কিন্তু দালালের মাধ্যমে দিলে সব ভুল যেন সঠিক হয়ে যায় শুধু নির্দিষ্ট দিন উপস্থিত থাকলেই ধারাবাহিকভাবে সব কাজ হয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআরটিএ অফিসের এক দালাল বাংলানিউজকে বলেন, ৬-৭ হাজার টাকা বিআরটিএ অফিসের লোকজনকে দিলে ড্রাইভিং লাইসেন্স করা কোনো ঘটনাই না। যে দিন আসতে বলবে সেই দিন শুধু ফিঙ্গারের ছাপ দিলেই সব কিছু হইয়া যাইবো, আর দুই মাসের ভিতর ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাইয়া যাইবো।

বিআরটিএ মানিকগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পরিচালক মোবারক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার এখানে কোনো দালালের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স হয় না। আর আমার অফিসের কোনো স্টাফ যদি দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।