জানা যায়, দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের এনায়েতনগর গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে আবদুল্লাহ আল মোনায়েম। জন্মের সময় থেকেই তার দুই হাত নেই।
দুই ভাইয়ের মধ্যে মোনায়েম বড়। অন্য সবার মতো সহপাঠী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাকেও অনেক আদর করেন। পা দিয়েই প্রতিদিনের পড়া খাতায় নোট করে সে। পড়ালেখার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেয় নিয়মিত। তবে, চিত্রাঙ্কনে আগ্রহ দেখে মা তাকে উজ্জীবক আর্ট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। সেদিকে জেলা ও উপজেলায় সেরা হয়ে এখন জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে প্রতিভাবান এ শিশুটি।
মোনায়েম বাংলানিউজকে জানায়, এমন সাফল্যে পরিবারের সবাই খুব খুশি। বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে- এ স্বপ্ন নিয়েই দিন কাটে তার।
মোনায়েমের মা বিবি কুলসুম বাংলানিউজকে জানান, গত ৭ মার্চ ও ২৬ মার্চ উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জেলায় দ্বিতীয়, মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় দিবসে উপজেলায় দ্বিতীয়, স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত পুষ্টি সপ্তাহে জেলায় দ্বিতীয় হয়েছে মোনায়েম। সন্তানের সফলতায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
স্থানীয় উজ্জীবক আর্ট স্কুলের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, শিশু মোনায়েমকে পা দিয়ে ছবি আঁকার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য তার প্রবল ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। আগামীতে সে আরও অনেকদূর যাবে বলে আশা করি।
অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ায় শিক্ষকেরা তাকে অনেক ভালোবাসেন ও সবসময় সহযোগিতা করেন।
দাগনভূঞা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখারুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মোনায়েমকে দেখে অন্য শিশুরাও সাহস পায়। সে জীবনে অনেক সফল হবে বলে বিশ্বাস করি। মানুষের ইচ্ছাশক্তি যে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে, তার উদাহরণ মোনায়েম।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা বাংলানিউজকে বলেন, মোনায়েম উচ্চশিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রেও সফল হবে, এমনটাই আশা করি। জীবনে এগিয়ে যেতে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধা নয়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মোনায়েম।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
এসএইচডি/একে