ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পোশাক বুনে স্বনির্ভর কারাবন্দিরা, অর্থ যাচ্ছে পরিবারে 

মাহফুজুর রহমান পারভেজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
পোশাক বুনে স্বনির্ভর কারাবন্দিরা, অর্থ যাচ্ছে পরিবারে 

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের গার্মেন্ট ও জামদানি কারখানায় এখন নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পোশাক প্রস্তুতে কাজ করছেন বন্দিরা। অনেকেই এতে উপার্জিত অর্থ পাঠাচ্ছেন নিজ পরিবারে। একই সঙ্গে অন্যদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন অনেক বন্দি। 

এ উদ্যোগের ব্যাপারে জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, ৫ হাজার বর্গফুটের মিনি গার্মেন্টটি কারা অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে। এতে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ৫৭টি মেশিন বসানো হয়েছে।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে সুইং, ওভারলক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মেশিন।  

গার্মেন্টটিতে দুই শিফটে ৩শ’ থেকে ৪শ’ বন্দি কাজ করছেন। জামদানি ও বিছানার চাদর তৈরিতে করছেন অর্ধশত কারাবন্দি। এছাড়াও এমব্রয়ডারি, নকশীকাথা, ব্লক বাটিক, মোম, নানা ধরনের শো-পিস, নারীদের পার্টস (ব্যাগ), শপিংব্যাগসহ বিভিন্ন ধরনের কারুপণ্য তৈরি হচ্ছে এখানে। জামাকাপড় তৈরির জন্য কারাওভ্যন্তরে একটি টেইলারিং সেন্টারও রয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।  

সুভাষ কুমার আরও জানান, যে সব কারাবন্দি এ কারখানায় কাজ করছেন তাদের নামে পৃথক অ্যাকাউন্টে লভ্যাংশের ৫০ ভাগ থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করা হচ্ছে। সে অর্থ তারা বাড়িতেও পাঠাতে পারেন,  কিংবা তা কারামুক্তির সময় নিয়ে যেতে পারবেন।  
গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় জেলা কারাগারে ডে কেয়ার সেন্টার, প্রিজন জেন্টস পার্লার ও স্টুডিও, বন্দী প্রশিক্ষণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্র এবং বন্দি ব্যারাকের উধ্বর্মুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা কারাগার্মেন্ট কর্মকর্তা ও এতে অংশ নেওয়া বিভিন্ন বন্দির সঙ্গে আলাপ করেন।

সে সময় কারাবন্দি সুমন মহাপরিদর্শককে জানান, জেলে আসার আগে তিনি রূপগঞ্জে জামদানির ওপর কাজ করতেন। বিগত ১০ বছরের কারাজীবনে তিনি ১৫ থেকে ২০ জনকে জামদানি তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এদের মধ্যে মিলন ও শহীদুল্লাহ নামে দুই বন্দি কারামুক্ত হয়ে বর্তমানে জামদানি তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।  

আরেক বন্দি মানিক পুলিশের উর্ধ্বতন এ কর্মকর্তাকে জানান, তিনি বর্তমানে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়মিত কাজ থাকলে এখান থেকে ভালোই উপার্জন হয়। যখন পর্যাপ্ত কাজ থাকে তখন মাসে ২০ হাজারের মতো টাকাও উপার্জন করা যায়। সেখান থেকে তিনি প্রতি মাসেই পরিবারের কাছে টাকা পাঠান।  

বন্দিরা কারা-মহাপরিদর্শককে জানান, গার্মেন্টে কাজ করার সময় তাদের নিজেকে আর বন্দি বলে মনে হয় না।  

এ সময় মহাপরিদর্শক বলেন, এটাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য। বন্দিরা যাতে কারাগারে দমবন্ধ অবস্থায় না থাকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
এমআরপি/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।