তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য শারুন বলছেন, এটি কোনো খোলা জায়গায় কিংবা ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য করা গুলি নয়। এটি রাশিয়ার একটি স্পেশাল ফোর্সের রেঞ্জে পর্যটকদের জন্য একটি শ্যুটিং প্যাকেজ।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন এমনটাই দাবি করেন।
তিনি বলেন, গত (২০১৮ সালের জুনে) ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে রাশিয়ায় যাই। সেখানে আমার এক রাশিয়ান বন্ধু সেখানকার স্পেশাল ফোর্সের রেঞ্জে পর্যটকদের জন্য পরিচালিত একটি শ্যুটিং স্পটে নিয়ে যায়।
‘আমি সেখানে একে-৪৭ এ এক ম্যাগজিন গুলি চালাই। আর সেই ভিডিওটি ওই বছরই আমার ফেসবুকে আপলোড দিই। কিন্তু একবছরের বেশি সময় পর তা ছড়িয়ে দিয়ে এবং উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ উপস্থাপন করে আমাদের রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। ’
হুইপপুত্র শারুন বলেন, পটিয়ায় আমার বাবা (হুইপ সামশুল হক চৌধুরী) তার নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও চট্টগ্রামের মানুষের কাছে একজন মানবদরদী নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এ ধরনের ভিডিও দিয়ে প্রভাব বিস্তারের যে কথা বলা হচ্ছে তা কোনোমতেই সঠিক নয়।
‘আমরা বিএনপি-জামায়াত আমলে নির্যাতিত হয়েছি। এসব বিষয় নিয়েই রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এমন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আসলে সময়ই বলে দেবে-কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা,’ যোগ করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ১৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সামরিক মহড়ার মতো শারুন একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে গুলি ছুড়ছেন। ধারাবাহিকভাবে ফায়ার করে চলেছেন। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর পরপরই ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওটি নিয়ে অনেকেই নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। কেউ বলছেন, সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানো জন্য এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম ও শারুনের একটি ফোনালাপও ফাঁস হয়েছে।
যেখানে হুইপের ছেলে শারুন মোবাইল ফোনে দিদারুল আলমকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে শারুন বলেন, এখন ফটোশপ করেও অনেক কিছু করা যায়। তবে আমরা সত্য দিয়েই সত্যকে মোকাবেলা করবো। এর জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
সম্প্রতি সরকারের শুদ্ধি অভিযানের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র এবং আবাহনী ক্লাবে একযোগে অভিযান চালায় র্যাব-৭।
দুই ক্লাব থেকে তাস, জুয়ার বোর্ড, জুয়ার ডাব্বাসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হলেও আবাহনী ক্লাবে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি।
এ অভিযানের পরদিন পটিয়ার এমপি ও চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাব লিমিটেডের মহাসচিব সামশুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবে র্যাবের অভিযানে ক্লাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কোনো ক্লাবে যদি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জুয়া বা ক্যাসিনো ব্যবসা চলে তা নিশ্চিত হয়ে এবং খোঁজখবর নিয়েই অভিযান চালানো উচিত।
তার এ বক্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। আর এর রেশ কাটতে না কাটতেই তার ছেলে শারুনের ‘গুলির ভিডিও’ ও কথোপকথন প্রকাশ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৯
এমএ/