ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মোজাফফর আহমদ দেশের প্রগতি আন্দোলনের একজন পথিকৃৎ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯
মোজাফফর আহমদ দেশের প্রগতি আন্দোলনের একজন পথিকৃৎ

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ দেশের প্রগতি আন্দোলনের অন্যতম একজন পথিকৃৎ ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পল্টনের মৈত্রী মিলনায়তনে সিপিবি আয়োজিত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের শোকসভায় তিনি একথা বলেন।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের জন্য তিনি আইন পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি বলেন, ষাটের দশকে চীন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভক্তির সময় তিনি দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন। বামপন্থীদের বৃহত্তম অংশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় সম্পৃক্ত রাখার ভূমিকা রাখেন। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ এদেশের সমাজ প্রগতির আন্দোলনর অন্যতম পথিকৃৎ।

বর্তমান বাস্তবতায় সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার জন্য ন্যাপের বিভিন্ন বিভক্ত অংশের ঐক্য কামনা করেন সেলিম।  

শোকসভায় আলোচনা করেন- সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ঐক্য ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম সবুর।

মোজাফফর আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বিশ্ব জনমতকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারই উদ্যোগে ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন যৌথ গেরিলা বাহিনী গড়ে ওঠে। যুদ্ধের পর দেশ গড়ার জন্য তিনি জাতীয় সরকার গঠন ও জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বান জানান।

ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সমর্থন দিয়েছিল তার প্রচেষ্টায়।

বাম জোটের সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান হয়েছে। তিনি তার জীবন বিলীন করে দিয়েছিলেন এদেশের গণমানুষের মুক্তির সংগ্রামে।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, মোজাফফর আহমদ ছিলেন এদেশের গরিব, দুঃখী, মেহনতি ও গণমানুষের নেতা। বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় সচেতনভাবেই মোজাফফর আহমদ ধর্ম-কর্ম-সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিলেন।

ঐক্য ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম সবুর বলেন, মোজাফফর আহমদ ছিলেন এদেশের নেতাদের নেতা। তিনি সারা জীবন ব্যয় করেছেন একটি প্রগতিশীল সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য।

শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সভা পরিচালনা করেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ কাফি রতন।
 
শোকসভার শুরুতেই অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বাংলাদেশের সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৯।
আরকেআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।