ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘আবুল কালাম যাকারিয়া ছিলেন অনুসরণযোগ্য মানুষ’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৯
‘আবুল কালাম যাকারিয়া ছিলেন অনুসরণযোগ্য মানুষ’ স্মরণসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, আমাদের সমাজে অনুসরণযোগ্য মানুষের সংখ্যা বিরল। আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ছিলেন এই বিরল মানুষদের একজন। তিনি ছিলেন সহজ-সরল ও সৎ মানুষ। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা ছিল তার প্রাণশক্তি। তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন।

মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রত্নতত্ত্ববিদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভার উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটি।

কমিটির চেয়ারম্যান আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ছিলেন বিদ্বান, বিচক্ষণ ও সুশিক্ষিত মানুষ। একজন সংস্কৃতিবান মানুষ ছিলেন। একজন সংস্কৃতিবান মানুষকে আমি পরিপূর্ণ মানুষ বলে মনে করি। সে হিসেবে তিনি একজন পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন।

আবুল কালাম যাকারিয়ার মৃত্যুকে ‘অকাল মৃত্যু’ অ্যাখা দিয়ে তিনি বলেন, কিছু মানুষ আছেন, তারা যতই দীর্ঘায়ু হন না কেন, তাদের মৃত্যুকে অকাল মৃত্যু বলে মনে হয়। সেজন্যই ৯৭ বছর বয়সে মারা গেলেও তার মৃত্যু আমাদের কাছে অকাল। তিনি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে আরও কিছু গবেষণা করতেন, বই লিখতেন ও দিকনির্দেশনা দিতেন। যা দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মও উপকৃত হতো।

তিনি বলেন, একজন মানুষের জীবনযাপন কতটা সহজ হতে পারে, তা তার জীবনযাপন দেখলে বোঝা যেতো। তার ঘরভর্তি ছিল বই। তিনি ছিলেন একজন ‘জাত গবেষক’। কিন্তু তাকে আমরা গবেষণামূলক পেশায় আনতে পারেনি। সারাজীবন তিনি একজন আমলা ছিলেন। তার মতো মানুষকে সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া গেলে, এ দেশের প্রত্নতত্ত্বের বিষয়ে আরও অনেক গবেষণা পাওয়া যেতো। বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করে তিনি মূলত মানবসভ্যতাকে এগিয়ে নিয়েছেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইশরাত জাহান কাকন, সেঁজুতি নওরোজ ও অরুনা সরকার। তাদের কণ্ঠে গীত হয় ‘জগৎ জুড়ে উদার সুরে, আনন্দগান বাজে’, ‘যদি এ আমার হৃদয় দুয়ার বন্ধ রহে’, ‘গানে গানে তব বন্ধন যাক টুটে’সহ আরও কয়েকটি গান। মেয়ে সুফিয়া আতিয়া যাকারিয়া বাবার স্মৃতির উদ্দেশে গেয়ে শোনান ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’ গানটি।

অনুষ্ঠানে আবুল কালাম যাকারিয়ার ছোট ছেলে মারুফ শমসের যাকারিয়া বলেন, আমার বাবা ৯৭ বছরের জীবনের ৯৬ বছরই কর্মক্ষম ছিলেন। যে বয়সে পিতারা সন্তানদের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন, সে সময়েও তিনি কাজ করেছেন নিরলসভাবে। জানার প্রতি তার অসম্ভব আগ্রহ ছিল। জ্ঞানকে ধারণ ও বিতরণেও তার আগ্রহ ছিল। তার এ গুণটি আমার কাছে অসাধারণ লাগে।

স্মরণসভার আলোচনা পর্ব শেষে পরিবেশিত হয় যোগীর গান। নাটোরের দিঘাপতিয়া গ্রামের বেলাল প্রামাণিক ও তার দল পরিবেশন করেন এই গান।

এসব আয়োজনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে আ ক ম যাকারিয়ার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোকচিত্র এবং তার রচিত গ্রন্থের একটি প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৯
ডিএন/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।