বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল লেক ক্যাসেলে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) উদ্যোগে ‘সহিংসতা ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে যুব সমাজের ভূমিকা: উত্তরবঙ্গ থেকে অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলা ভাই, জামায়াতের মিলিটারি সংগঠন ছাত্র শিবিরসহ জঙ্গি সংগঠনগুলো অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস দূর করতে বদ্ধ পরিকর। সরকার জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দূর করতে অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সচেতনতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যুব সমাজের উন্নয়নে জাতিসংঘের পুরস্কারও পেয়েছেন।
সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দূর করতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে বেশি বেশি প্রতিবেদন করুন। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে সহযোগিতা করুন। কারা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ ও যোগান দেয়, তা গণমাধ্যমে প্রচার করুন। তাদের মুখোশ উন্মোচন করেন।
তিনি বলেন, উগ্রবাদ সন্ত্রাস নির্মূলে সুশীল সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। শুধু সরকার নয়, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সব মহল এগিয়ে আসলে এ উগ্রবাদ দূর হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনোয়াত প্রেফান্তে বলেন, জঙ্গিবাদ দূর করতে কানাডা সবার সঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার কানাডা।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ অনেক দেশেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এর বিরুদ্ধে সব দেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, সন্ত্রাসবাদ বৈশ্বিক সমস্যা। জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদ দূর করতে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। কিন্তু, এ ধর্মের অপব্যাখা করে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ এ অঞ্চলের বড় একটি সমস্যা। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে জঙ্গিরা সক্রিয়। বাংলাদেশে জেএমবি সক্রিয়। কিন্তু, সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে জঙ্গিদের অনেকটা নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব নয়। এটা দূর করতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত হতে হবে।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সন্ত্রাসবাদের চারটি দিক নিয়ে কাজ করেছি। আমরা দেখেছি, কোরআনে জিহাদের আয়াতের অপব্যাখা দিয়ে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত করা হয়। এদেশের প্রায় আট কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এখানে জঙ্গিবাদের প্রচুর বিষয় রয়েছে। কিন্তু, এর বিপরীতে পর্যাপ্ত উপাদান নেই। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইমামদের সোচ্চার হতে হবে।
বিইআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিইআই’র বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য ফারুক সোবহান, উদ্যোগ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান খন্দকার। গোলটেবিল বৈঠকে উত্তরাঞ্চলের কলেজ-মাদ্রাসার ১৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৯
টিএম/একে