ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

টিসিবির পেঁয়াজ যেন সোনার হরিণ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৯
টিসিবির পেঁয়াজ যেন সোনার হরিণ! টিসিবির ট্রাকে পেঁয়াজের জন্য ভিড়

ঢাকা: দফায় দফায় দাম বাড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা পেঁয়াজ এখন যেন সোনার হরিণ! এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা। প্রশাসনের নজরদারির পরও ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় লাগামছাড়া হয়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে তাই ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। 

যদিও অনেক ক্রেতা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পেঁয়াজ পাচ্ছেন না। বাড়ি ফিরছেন শূন্য হাতে।

ট্রাক সংখ্যা বাড়িয়েও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ভিড়।

বুধবার (২ অক্টোবর) নগরীর খামারবাড়ি মোড়ে এ চিত্র দেখা যায়। টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে শত শত মানুষের লাইন। অন্য পণ্য নয়, সবার উদ্দেশ্য পেঁয়াজ কেনা।

তেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনতে পারেননি। বুধবারও খামারবাড়ি মোড়ে টিসিবির ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত লাইন দাঁড়িয়েও মিলছে না পেঁয়াজ।

মিজানুর রহমান বলেন, দুই কেজি পেঁয়াজের জন্য দু’দিন লাইনে দাঁড়িয়ে তবুও পেঁয়াজ পাচ্ছি না। আজও পেঁয়াজ পাবো কী সন্দেহ আছে।

ফার্মগেট এলাকায় মেসের বাসিন্দা সাইফুল বলেন, অন্য বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ কেনার টাকা দিয়ে তিন কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবো। কিন্তু পেঁয়াজ ট্রাকে কম, পাবো কিনা সন্দেহ। পেঁয়াজের থেকে লাইনে বেশি মানুষ। ’

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্র জানায়, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে ট্রাকে করে ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। ঢাকা মহানগরীর ৩৫টি স্থানে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

এছাড়া চট্টগ্রামসহ অন্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি চলবে। তবে শুক্রবার বন্ধ থাকবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ পাবেন। সেই হিসেবে ৩৫টি ট্রাকে সাত হাজার পরিবার পেঁয়াজ পাবেন। একটি ট্রাকে সর্বোচ্চ ৪শ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।  

যেসব স্থানে টিসির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে
১. সচিবালয়ের গেট ২. প্রেসক্লাব ৩. কাপ্তান বাজার ৪. ভিক্টোরিয়া পার্ক ৫. সায়েন্সল্যাব মোড় ৬. নিউ মার্কেট/নীলক্ষেত মোড় ৭. শ্যামলী/কল্যাণপুর ৮. ঝিগাতলা মোড়, ৯. খামারবাড়ি, ফার্মগেট; ১০. কলমীলতা মোড় ১১. রজনীগন্ধা সুপার মার্কেট, কচুক্ষেত; ১২. আগারগাঁও তালতলা ও নির্বাচন কমিশন অফিস ১৩. রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স, উত্তরা ১৪. মিরপুর-১ নম্বর মাজার রোড ১৫. শান্তিনগর বাজার ১৬. মালিবাগ বাজার ১৭. বাসাবো বাজার ১৮. আইডিয়াল স্কুল, বনশ্রী ১৯. বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর ২০. মহাখালী কাঁচাবাজার ২১. শেওড়াপাড়া বাজার ২২. দৈনিক বাংলা মোড় ২৩. শাহজাহানপুর বাজার ২৪. ফকিরাপুল বাজার ও আইডিয়াল জোন ২৫. মতিঝিল বক চত্বর ২৬. খিলগাঁও তালতলা বাজার ২৭. রামপুরা বাজার ২৮. মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর ২৯. আশকোনা হাজি ক্যাম্প ৩০. মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজার ৩১. দিলকুশা ৩২. মাদারটেক নন্দীপাড়া কৃষি ব্যাংকের সামনে ও পলাশী মোড়ে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

টিসিবির ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জুয়েল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, একটি ট্রাকে ৪শ কেজি পেঁয়াজ থাকে। আমরা সর্বোচ্চ ২শ পরিবারকে পেঁয়াজ দিতে পারবো। ৪শ পরিবার এলে কীভাবে পেঁয়াজ দেবো।

তিনি আরও বলেন, ৩৫টি ট্রাক প্রতিদিন ৭ হাজার পরিবারকে পেঁয়াজ দিচ্ছে। আশাকরি এভাবে কয়েকদিন চলতে থাকলে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৯
এমআইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।