শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ষষ্ঠী দিয়ে পূজা শুরু হবে, মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
এবার খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় চার হাজার নয়শ ৭০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গত বছর খুলনা বিভাগে চার হাজার আটশ ৪১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অর্থাৎ এবার ১২৯টি বেশি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
খুলনার উল্লেখযোগ্য মণ্ডপগুলো হচ্ছে, শিববাড়ী, শীতলাবাড়ি, তালতলা আর্য্য কালি মন্দির, পঞ্চবীথি, আর্য্য ধর্মসভা, বড়বাজার, দোলখোলা, কয়লাঘাট কালিবাড়ি, ওমানন্দ শিবমন্ডির, মহেশ্বরপাশা বনিকপাড়া, সাহেবের কবরখানা, রূপসা উপজেলার দুর্জনীমহল, আইচগাতি, পিঠাভোগ, বটিয়াঘাটা উপজেলার নারায়ণপুরের মহানামা যজ্ঞাস্থলী গোপাল বাড়ি, শৈলমারী, ঝড়ভাঙ্গা, হোগলাডাঙ্গা, জলমা, ডুমুরিয়া উপজেলার আন্দুলিয়া মণ্ডপ, চুকনগর মালো পাড়া, খর্ণিয়া বাজার, দাকোপ উপজেলার চালনা বাজার, বউমার গাছতলা, লাউডোব, পোদ্দারগঞ্জ, লক্ষীখোলা, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি মিলনমন্দির, পাইকগাছা বাজার, তেরখাদা উপজেলার আমতলা উত্তরপাড়া, দিঘলিয়া উপজেলার মাঝিরগাতি হাইস্কুল, গাজিরহাট, ফুলতলা বাজার বনিক সমিতি, জামিরা বাজার, মাতৃসেবা, দামোদর গাছতলা ও কয়রা উপজেলার আমাদি বাজার, চান্নিরচক, সুরখালী, মহেশ্বরীপুর, ভাগবা ও খড়িয়া। বটিয়াঘাটার নারায়ণপুরের মহানামা যজ্ঞাস্থলী গোপাল বাড়ি মণ্ডপের পূজার আয়োজক খুলনার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল বলেন, আলোকসজ্জা ও প্রতিমার দিক থেকে অন্যবারের চেয়ে এবার আকর্ষণীয় করা হয়েছে। প্রতিমা আর মণ্ডপে নান্দনিকতা ফুটে উঠেছে। ভক্ত সমাগমও অনেক বেশি হবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, পূজাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে গোপাল বাড়ির মণ্ডপে। পূজাকে বর্ণাঢ্য করতে মণ্ডপকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে খুলনায় পুলিশ বিভাগের সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গুরুত্ব অনুসারে পূজা মণ্ডপগুলোকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ এ ৩টি শ্রেণিতে বিভক্ত করে সে অনুপাতে অফিসার-ফোর্স মোতায়েন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পোশাকে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এমনকি র্যাবের টহলও থাকবে।
খুলনা বিভাগের মণ্ডপগুলোতে অনুষ্ঠিতব্য দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা পুলিশের ছয় হাজার সদস্যসহ পুলিশ-আনসারবাহিনী মিলে ৪৬ হাজার ৪৪৮ সদস্য দায়িত্বে থাকবেন বলে জানিয়েছেন খুলনা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
জিআইজি বলেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা পরিদর্শন করবেন। পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তায় খুলনার পুলিশ বিভাগকে ৪২টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারে তার সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পূজার সময় ডিআইজির দপ্তরসহ বিভাগের ১০ জেলায় কন্ট্রোলরুম সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে।
পূজা উদযাপন পরিষদ, খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি শ্যামল হালদার বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) দেবীর বোধন। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজা করা হবে। মণ্ডপে-মন্দিরে বৃহস্পতিবার পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় হবে বন্দনাপূজা। শারদীয় দুর্গোৎসবের ষষ্ঠী পূজা শুক্রবার (৪ অক্টোবর)। ৮ অক্টোবর বিজয়া দশমী। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসব।
তিনি জানান, খুলনা মহানগরীর ৮ থানায় ১২৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি থানায় থানায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সভা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা জেলা শাখার সভাপতি কৃষ্ণপদ দাস বাংলানিউজকে জানান, এবছর খুলনা জেলায় ৮৬৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জেলায় এবার মণ্ডপ বেড়েছে ১৪টি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক থাকায় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৯
এমআরএম/এএটি